মেহেরপুরে ব্যাপক সংঘর্ষ, জামায়াতকর্মী নিহত

মেহেরপুরে হরতালের দ্বিতীয়দিনে সড়কে আগুন জ্বালিয়ে শুয়ে পড়ে অবরোধ করে জামায়াত কর্মীরা। ছবি: তুহিন আরন্য
মেহেরপুরে হরতালের দ্বিতীয়দিনে সড়কে আগুন জ্বালিয়ে শুয়ে পড়ে অবরোধ করে জামায়াত কর্মীরা। ছবি: তুহিন আরন্য

হরতালের দ্বিতীয় দিনে আজ বৃহস্পতিবার সকালে মেহেরপুরের মুজিবনগরে পুলিশের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের কর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এতে জামায়াতের এক কর্মী নিহত হয়েছেন। পুলিশসহ আহত হয়েছে অন্তত নয়জন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জেলায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
নিহত ব্যক্তির নাম দেলোয়ার হোসেন (৩৪)।আহত অবস্থায় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। নিহতের বাবা শোয়েব আলী প্রথম আলো ডটকমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
আহতদের মধ্যে পুলিশের পাঁচজন সদস্য রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) শামসুল মান্নানের অবস্থা গুরুতর। তাঁর হাতে ও মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। তাঁকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বাকিদের মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অপরদিকে সংঘর্ষে জামায়াত-শিবিরের চারজন কর্মী আহত হয়েছেন। এঁদের মধ্যে জেলা জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির তাজউদ্দিনের ছেলে আবদুল্লাহ আল নোমানের অবস্থা গুরুতর। আহতদের মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মেহেরপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) আবদুল জলিল প্রথম আলো ডটকমকে জানিয়েছেন, জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা আজ সকাল আটটার দিকে গাছের গুঁড়ি ফেলে মুজিবনগরের গৌরীনগর সড়কের খাল মোড় অবরোধ করেন। ছত্রভঙ্গ করতে গেলে তাঁরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। একপর্যায়ে তাঁরা পুলিশের এসআই শামসুল মান্নানকে ধরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করেন। তাঁদের ছোড়া ইটের আঘাতে মুজিবনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলামসহ ৪ পুলিশ সদস্য আহত হন। আত্মরক্ষার্থে তখন পুলিশ গুলি চালায়।

পুলিশের গুলিতে জেলা জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির তাজউদ্দিনের ছেলে আবদুল্লাহ আল নোমান (৩২), দারিয়াপুর গ্রামের শোয়েব আলীর ছেলে দেলোয়ার হোসেনসহ (৩৪) জামায়াতের পাঁচজন কর্মী আহত হন। আহত দেলোয়ারকে মেহেরপুর থেকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান।

হরতালে হতাহতের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) আবদুল জলিল বলেন, সীমিত জনবল নিয়ে অবরোধকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশের এগিয়ে যাওয়া ঠিক হয়নি। নিহত ব্যক্তি জামায়াতের কর্মী বলে জানা গেছে।

মেহেরপুর পুলিশ সুপার এ কে এম নাহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলায় বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

এদিকে আজ সকাল আটটার দিকে মুজিবনগর বন্দর গ্রামে জামায়াতের কর্মীরা রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ সৃষ্টি করেন। তাঁরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সড়কের ওপর বিক্ষোভ করতে থাকেন। অবরোধকারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করলে তাঁরা পুলিশের ওপর চড়াও হন। পিছু হটলে জামায়াতের কর্মীরা পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যান গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন।

ঘটনার বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে জামায়াতের একাধিক নেতার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছে। তবে তাঁদের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।