কী অপরাধ ছিল খেটে খাওয়া মানুষটির?

হরতালের রাতে দুর্বৃত্তদের দেওয়া পেট্রলের আগুনে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন ট্রাকের চালক সেকান্দার ব্যাপারী (৪০)। জামায়াতের ডাকা ৪৮ ঘণ্টা হরতালের সময় বুধবার রাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়কের চৌদ্দগ্রাম এলাকায় দুর্বৃত্তরা পেট্রল দিয়ে ট্রাকে আগুন ধরিয়ে দেয়। জীবন বাঁচাতে ট্রাকচালক পালানোর চেষ্টা করলে তাঁর শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
দগ্ধ এ ট্রাকচালককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাঁর বাড়ি শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার উত্তর কেবলনগর গ্রামে। সেকেন্দারের স্ত্রী রুমা বেগম হাসপাতালে শিশু সন্তানদের নিয়ে বিলাপ করে যাচ্ছেন। গতকাল শুক্রবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, স্বামীর আয়ে দুই সন্তান নিয়ে সুখেই দিন কাটাচ্ছিলেন।
স্বামীর এ পরিণতিতে তিনি এখন কোথায় দাঁড়াবেন এ শঙ্কা তাঁর মনে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘কী অপরাধ ছিল খেটে খাওয়া এ মানুষটির। কেন একটি জীবন্ত মানুষকে আগুন দিয়ে পোড়াতে হবে। এ কেমন রাজনীতি। কীভাবে স্বামীর চিকিৎসার খরচ জোগাড় করব এখন সেই চিন্তায় আছি।’
সেকান্দারের ভাই আবুল হোসেন ব্যাপারী জানান, ‘সেকান্দার কৃষি যন্ত্রপাতি বোঝাই করে ট্রাক নিয়ে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাচ্ছিলেন। চৌদ্দগ্রাম এলাকায় রাস্তায় দুর্বৃত্তদের হামলা দেখে তিনি ট্রাক ঘোরানোর চেষ্টা করছিলেন। দুর্বৃত্তরা মোটরসাইকেলে করে এসে ট্রাকে আগুন ধরিয়ে দেয়। আমার ভাই পালানোর চেষ্টা করলে তাঁর শরীরে দুর্বৃত্তরা পেট্রোল ঢেলে আগুন দেয়। তাঁর সহকারী সোহেল মিয়া পাশের একটি পুকুর থেকে পানি এনে আগুন নেভান। পুরো শরীর দগ্ধ হয়ে গেছে। আল্লাহই জানেন তাঁকে আমরা বাঁচাতে পারব কি না।’
ট্রাকের মালিক সুমন মিয়া বলেন, ‘সেকান্দার ১৫ দিন আগে আমার ট্রাকে চাকরি নেন। তাঁর চিকিৎসায় সহায়তা করা হবে। পুলিশ মামলা করায় এ বিষয়ে আমরা কোনো মামলা করিনি।’
কুমিল্লার পুলিশ সুপার টুটুল চক্রবর্তী বলেন, এ ঘটনায় চৌদ্দগ্রাম থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। অপরাধীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।