পাঁচ ছাত্রাবাসে সংস্কার নেই

১১৪ বছরের ঐতিহ্যবাহী কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের পাঁচটি ছাত্রাবাসে উন্নয়নের কোনো ছোঁয়া লাগেনি। পরিত্যক্ত, জরাজীর্ণ ভবন ও জলাবদ্ধতার মধ্যে থাকতে হচ্ছে এক হাজার ৩৫ জন শিক্ষার্থীকে। এ ছাড়া ২০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী আবাসন সুবিধাবঞ্চিত।
কলেজের প্রধান সহকারী আবু ছালেহ মো. শামসুজ্জামান বলেন, ১৮৯৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৩০ সালে শেরেবাংলা ছাত্রাবাস, ১৯৪৭ সালে রবীন্দ্র ছাত্রাবাস ও সোহরাওয়ার্দী ছাত্রাবাস, ষাটের দশকে কবি নজরুল হল ও নব্বইয়ের দশকে নওয়াব ফয়জুন্নেছা ছাত্রীনিবাস নির্মাণ করা হয়। ১৫ বছর আগে নগরের দক্ষিণ চর্থা এলাকার শেরেবাংলা ছাত্রাবাস ও তিন বছর আগে টমছম ব্রিজ এলাকার রবীন্দ্র ছাত্রাবাস বন্ধ হয়ে যায়। চলতি বছরের জুন মাসে একই এলাকার সোহরাওয়ার্দী ছাত্রাবাসের পূর্ব ও পশ্চিম ভবনকে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন ঝুঁকিপূর্ণ ও পরিত্যক্ত ঘোষণা করে। বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী ছাত্রাবাসের চারতলা একটি ভবন রয়েছে। ওই ভবনের দরজা জানালা ভাঙা ও বাথরুম জরাজীর্ণ।
অন্যদিকে শহরতলির ধর্মপুর এলাকার কবি নজরুল হলের সংস্কার নেই দীর্ঘদিন। দরজা-জানালা ভাঙা, আসবাব সংকট রয়েছে। নওয়াব ফয়জুন্নেছা ছাত্রীনিবাস বছরের অধিকাংশ সময় থাকে জলাবদ্ধ।
কলেজের শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক ও হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আবু তাহের বলেন, এ কলেজে বর্তমানে উচ্চমাধ্যমিক, স্নাতক (পাস ও সম্মান) ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ২২ হাজার ৭৯৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এর মধ্যে ছাত্র ১৩ হাজার ৫৪২ জন, ছাত্রী নয় হাজার ২৫৩ জন। কলেজে পাঁচটি ছাত্রাবাসে ছাত্রদের জন্য ৬৩৫টি আসন এবং ছাত্রীদের জন্য ৪০০ আসন রয়েছে। অবশিষ্ট ২১ হাজার ৭৬০ জন শিক্ষার্থীর কোনো ধরনের আবাসনের ব্যবস্থা নেই।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, শেরেবাংলা ছাত্রাবাসে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত উচ্চমাধ্যমিকের ছাত্ররা ছিল। এর পর থেকে ছাত্রাবাসটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। একতলা লম্বাকৃতির ছাত্রাবাসটি বহু প্রাচীন এবং বসবাসের ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সেখানে ছাত্রদের থাকা বন্ধ করে দেওয়া হয়। ২০০৫ সালে ওই ছাত্রাবাসের নাম পরিবর্তন করে ‘ছাত্রীনিবাস’ করা হয়। তবে এখন পর্যন্ত সেখানে কোনো ছাত্রী উঠানো হয়নি। কলেজ কর্তৃপক্ষ সেখানে একটি সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেওয়া ছাড়া আর কোনো কাজ করেনি। দীর্ঘদিন অরক্ষিত থাকায় ছাত্রীনিবাসের ভেতরে বহিরাগতরা প্রবেশ করে থাকে। তারা সেখানে মদ ও জুয়ার আসর বসায়।
কলেজের অধ্যক্ষ এ কে এম আছাদুজ্জামান বলেন, অর্থ বরাদ্দ না থাকায় ছাত্রাবাসগুলো সংস্কার ও মেরামত করা যাচ্ছে না। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরকে জানানো হয়েছে।