'ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত আর বাক-স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ দুটোই অপরাধ'

আনিসুজ্জামান। ফাইল ছবি
আনিসুজ্জামান। ফাইল ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেছেন, মানুষের ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা যেমন অপরাধ, তেমনি মানুষের বাক-স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করাও অপরাধ। কিন্তু সরকার বিরোধীদলকে মত প্রকাশের স্বাধীনতা দেয় না, বিরোধী দলও মানুষকে স্বাধীনভাবে চলাফেরার স্বাধীনতা দেয় না।

আজ শনিবার বিকেলে স্বাধীনতা দিবস ২০১৫ উপলক্ষে ‘বাংলাদেশ রুখে দাঁড়াও’ শিরোনামের এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান এসব কথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সি মজুমদার মিলনায়তনে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। তিনি বলেন, ‘আমরা অনেক সময় ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত না করার কথা বলি। কিন্তু ধর্মীয় অনুভূতির মতো বাক-স্বাধীনতায় বাধা দেওয়াও যে অন্যায়, সেটা জোর গলায় বলি না।’

অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, বাহাত্তর সালে সংবিধানে বলা হয়েছিল, সবার ধর্ম মানার, পালনের স্বাধীনতা থাকবে। কিন্তু ধর্ম পালন না করার স্বাধীনতাও থাকবে, এ কথাটাও সবাই মানত। কিন্তু এখন মনে করা হচ্ছে, এটা ভয়ংকর অপরাধ। কিছু লোক ইচ্ছে করলেই কাউকে ধর্মবিরোধী বলে তার মৃত্যুদণ্ড দিয়ে ফেলতে পারে, মৃত্যুদণ্ড কার্যকরও করতে পারে। এটি বাংলাদেশের চিত্র হতেই পারে না।

আনিসুজ্জামান আরও বলেন, ‘আমরা যে দেশে গণতন্ত্রের কথা বলছি, সে দেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকবে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এখন সেই স্বাধীনতাকে শুধু অস্বীকার করাই নয়, বিরুদ্ধাচরণও করা হচ্ছে। এ দেশে বারবার গণতন্ত্র ছিনতাই হয়েছে। কিন্তু তারপর গণতন্ত্র যখন ফিরে এসেছে, তখন থেকে এখন পর্যন্ত গণতন্ত্রের মূল ব্যাপারগুলো প্রতিষ্ঠিত হয়নি। সংসদ এখনো রাজনীতির মূলকেন্দ্র হতে পারেনি। সরকার বিরোধীদলকে মত প্রকাশের স্বাধীনতা দেয় না, সভা সমাবেশের অনুমতি দেয় না। তেমনি বিরোধী দলও সাধারণ মানুষকে চলাফেরার স্বাধীনতা দেয় না।’
আলোচনা শুরুর আগে দেশের সাম্প্রতিক সময়ের উগ্র জঙ্গিবাদী তৎপরতাকে রুখে দিতে ঘোষণাপত্র পাঠ করেন সাংবাদিক আবেদ খান। সভায় সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি সারওয়ার আলী প্রমুখ বক্তব্য দেন ।