বিএসএফের গুলিতে তিন মাসে ১০ বাংলাদেশি নিহত

খুলনা বিভাগের যশোর, ঝিনাইদহ ও মেহেরপুর সীমান্তে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত তিন মাসে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে ১০ বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। মানবাধিকার সংগঠন রাইটস যশোর গত রোববার সংগঠনের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানায়।
তিন মাসে ১৩ জন বাংলাদেশিকে অপহরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সাতজন বিএসএফ সদস্যদের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে জানায় সংগঠনটি। সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক বিনয়কৃষ্ণ মল্লিক বলেন, বিএসএফের হাতে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি নির্যাতনের শিকার হয়েছেন গরু আনতে গিয়ে। এর মধ্যে যশোরের শার্শা উপজেলার পুটখালী, সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার চান্দুটিয়া সীমান্ত, চুয়াডাঙ্গার বেনীপুর, কুষ্টিয়ার মোহম্মদপুর ও দৌলতপুর সীমান্তে বেশি নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে।
এ ছাড়া সংগঠনটি আত্মহত্যা, নিখোঁজ, সহিংসতা ও মানব পাচার বিষয়ে বিভিন্ন পরিসংখ্যান তুলে ধরে। জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশিত খবরের ভিত্তিতে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে বলে বিনয়কৃষ্ণ জানান। তিনি বলেন, গত তিন মাসে মানব পাচারসহ বিভিন্ন ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় ১ হাজার ৫৭১ জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এ সময়ের মধ্যে খুলনা বিভাগে ৭৪ জন আত্মহত্যা করেছেন। এর ৩৮ জন নারী, ২০ জন পুরুষ ও ১৫ জন শিশু। পারিবারিক বিরোধের জেরে অধিকাংশ আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে।
এ ছাড়া ১০ জেলায় মোট ৮৭ জন নিখোঁজ হয়েছেন। এর মধ্যে দুজন নারী, ১৬ জন পুরুষ এবং ১৮ জন শিশু। যশোরে সবচেয়ে বেশি নিখোঁজের ঘটনা ঘটেছে।
এসব জেলায় পুলিশি নির্যাতনের শিকার হয়েছেন কমপক্ষে ৯৩ জন। রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে ৯২টি। এসব ঘটনায় মোট ২৮৯ জন আহত হন। হরতাল ও অবরোধ চলাকালে যশোরে ৩৩টি, খুলনায় ১৭টি, ঝিনাইদহ ও মাগুরায় ১৩টি করে, বাগেরহাটে চারটি এবং নড়াইল, কুষ্টিয়া, সাতক্ষীরা ও মেহেরপুরে তিনটি করে সহিংসতার ঘটনা ঘটে।
এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে ১৩৬ জন খুন হয়েছেন। মানব পাচারের ঘটনা ঘটেছে ১২৫টি। ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে কমপক্ষে ২৪টি। অপহৃত হয়েছেন ১৩০ জন।