রাঙামাটিতে আদিবাসী সংস্কৃতি মেলা শুরু

রাঙ্গামাটি সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে গতকাল আদিবাসী মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গান গাইছে শিশুরা l প্রথম আলো
রাঙ্গামাটি সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে গতকাল আদিবাসী মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গান গাইছে শিশুরা l প্রথম আলো

আদিবাসী সংস্কৃতি সংরক্ষণ ও বিকাশে ব্যাপক চর্চার আহ্বানের মধ্য দিয়ে রাঙামাটিতে ১৪তম পার্বত্য চট্টগ্রাম আদিবাসী সংস্কৃতি মেলা ২০১৫ শুরু হয়েছে। ‘রিনাফ্লুং, ট্র, টিংটেং ও শিঙায় বেজে উঠুক আদিবাসী জীবনের গান’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে গতকাল বুধবার রাঙামাটি সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে বর্ণাঢ্য আয়োজনে তিন দিনব্যাপী এ মেলা শুরু হয়।
পার্বত্য চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সংগঠন জুম ঈসথেটিকস কাউন্সিল (জাক) এ মেলার আয়োজন করে। গতকাল সন্ধ্যা ছয়টায় আদিবাসীদের জুমঘরের আদলে তৈরি ইজোরে (বাঁশের খুঁটির ওপর তৈরি খোলা বারান্দা) ১৪টি মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে মেলা উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট সমাজকর্মী রেভারেন্ট এল ডলিয়েন বম। এ সময় ১৪ বার মং (বড় ঘণ্টা) বাজানো হয়। আদিবাসীদের বর্ষবিদায় ও বরণ উৎসব উপলক্ষে ১৯৯৮ সাল থেকে জাক প্রতিবছর এ মেলা আয়োজন করে আসছে।
জাক সভাপতি ও ১৪তম আদিবাসী সংস্কৃতি মেলা ২০১৫ আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক মিহির বরণ চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী সভায় বক্তারা বলেন, আকাশ সংস্কৃতি ও বাঙালি সংস্কৃতির আগ্রাসনের মধ্যে আদিবাসী সংস্কৃতি রক্ষা ও বিকাশ ঘটাতে হলে ব্যাপক চর্চা ও গবেষণায় মনোযোগী হতে হবে। সরকারের দায়িত্ব আদিবাসীদের সংস্কৃতি রক্ষায় উদ্যোগ গ্রহণ করা। কিন্তু সরকার তার পরিবর্তে আদিবাসীদের পৃথক জাতিসত্তাকে অস্বীকার করছে। অথচ আদিবাসী জাতি ও সংস্কৃতি বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের ধারক।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মংসানু চৌধুরী এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন লেখক ও গবেষক জিরকুং শাহু ও মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা। স্বাগত বক্তব্য দেন ১৪তম আদিবাসী সংস্কৃতি মেলা আয়োজক কমিটির যুগ্ম সম্পাদক শান্তিময় চাকমা।
অনুষ্ঠানে সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে অবদানের জন্য লেখক ভগদত্ত খীসা (মরণোত্তর), রেভারেন্ট এল ডলিয়েন বম ও সিংইয়ং ম্রোকে জাক সম্মাননা ২০১৫ দেওয়া হয়।
মেলায় আদিবাসী পিঠা ও খাদ্য উৎসব, বিভিন্ন আদিবাসী সম্প্রদায়ের ক্ষুদ্র শিল্প প্রদর্শনী ও বিক্রয়, সমাজ, সংস্কৃতি ও পরিবেশবিষয়ক স্থিরচিত্র প্রদর্শনী, বেইন বুনন (কোমর তাঁত) আয়োজন করা হয়েছে। মেলার প্রথম দিনে বম, ম্রো ও ত্রিপুরা সাংস্কৃতিক দল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে।
মেলা আয়োজনে সহযোগিতা করছে এ কে খান ফাউন্ডেশন।