পাহাড়ে বর্ষবিদায় ও বরণ উৎসবের অনুষঙ্গ 'পাজন'

আদিবাসীদের বর্ষবিদায় ও বরণের উৎসব বিঝু, বৈসুক, সাংগ্রাই, বিষু, বিহু উৎসবের আগে গতকাল শনিবার রাঙামাটি শহরে ছিল শেষ হাটবার। তাই জমে উঠেছিল বাজার। উৎসবের প্রধান অনুষঙ্গ ‘পাজন’ রান্নার জন্য নানা ধরনের শাকসবজি কিনতে ব্যস্ত ছিলেন আদিবাসীরা।
আজ রোববার থেকে আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত উৎসব চলবে। সোমবার উৎসবের মূল দিন। সেদিন আদিবাসীদের সবার বাড়িতে নানা খাবারের আয়োজন করা হয়। তবে নানা ধরনের শাকসবজি দিয়ে তৈরি পাজন থাকবে সবার বাড়িতে। কোনো কোনো গ্রামে পরিবারগুলোর মধ্যে পাজন রান্নার প্রতিযোগিতাও চলে।
গতকাল ভোর থেকে গ্রামের চাষিরা তাঁদের উৎপাদিত পণ্য নিয়ে রাঙামাটি শহরের কল্যাণপুর-টিঅ্যান্ডটি, বনরূপা, তবলছড়ি ও আসামবস্তী বাজারে আসতে থাকেন। সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল সাতটার আগেই রাঙামাটি শহরের বাজারগুলো লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে। অনেকে একাধিক বাজার ঘুরে কিনেছেন পছন্দসই পণ্য। লোকজন হাটে এসে দেখেশুনে কিনেছেন পাজন রান্নার শাকসবজি।
আদিবাসী লেখক সুগত চাকমার মতে, বাংলা ‘পাচন’ শব্দ থেকে আদিবাসীদের ‘পাজন’ শব্দটি এসেছে। তবে খাদ্যাভ্যাসের কারণে পাচন ও পাজন রান্নার পদগুলো হয় ভিন্ন। ২৫ থেকে ৩০ বা তারও বেশি ধরনের শাকসবজির মিশ্রণে পাজন রান্না করা হয়। পাজন রান্নায় পদের সংখ্যা বাড়াতে স্বজন বা প্রতিবেশীদের সঙ্গে চলে শাকসবজি বিনিময়।
উৎসবের দিনে পাজন খেতে নানাভাবে উৎসাহিত করা হয়। আদিবাসীরা মনে করেন, পাজন খেলে কোনো দিন বদহজম হয় না। সুগত চাকমা বলেন, চাকমাদের প্রচলিত ধারণা আছে, উৎসবের দিন কারও বাড়িতে গেলে অবশ্যই পাজন খেতে হয়।