বিয়ানীবাজারবাসী বিদ্যুতের তীব্র লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ

তীব্র লোডশেডিংয়ে সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার ৪০ হাজার পল্লীবিদ্যুৎ গ্রাহক সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। সকাল থেকেই শুরু হয় বিদ্যুতের আসা-যাওয়া। প্রায়ই দুপুর ১২টার পর থেকে সারা দিন বিদ্যুৎ থাকে না। সন্ধ্যায় আবার শুরু হয় বিদ্যুতের আসা-যাওয়া।
লোডশেডিংয়ের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্যের অনেক ক্ষতি হচ্ছে ও শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় বিঘ্ন ঘটছে।
এলাকার অনেকে জানান, পৌরসভা এলাকাসহ উপজেলার সব ইউনিয়নেই বিদ্যুতের তীব্র লোডশেডিং চলছে। দিনের অধিকাংশ সময় এখানে বিদ্যুৎ থাকে না। ফলে উপজেলা সদরের সব ব্যাংক, বিমা, সরকারি কার্যালয়, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও বিপণিবিতানে জেনারেটর চালিয়ে বাতি ও বৈদ্যুতিক পাখা চালাতে হচ্ছে। এতে অর্থ ব্যয়ের পাশাপাশি শব্দ দূষণ হচ্ছে। যন্ত্রণা সহ্য করতে হয় ক্রেতা-বিক্রেতা সবাইকে।
সম্প্রতি পৌর শহরের জামান প্লাজা, আল আমিন সুপার বিপণিবিতান, সাত্তার শপিং কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন বিপণিবিতানে গিয়ে দেখা যায়, অন্ধকারে মোমবাতি ও চার্জডলাইট জ্বালিয়ে বসে আছেন ব্যবসায়ীরা। কোনো কোনো দোকানে চলছে জেনারেটর।
হাসিব বস্ত্রবিতানের স্বত্বাধিকারী আবদুল হাসিব বলেন, ‘ঈদুল ফিতরের সময় যে লাভ করেছিলাম এখন জেনারেটর চালিয়ে তা ফেরত দিচ্ছি।’
পৌরসভা এলাকার শ্রীধরা গ্রামের বাসিন্দা বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজের স্নাতক (পাস) প্রথম বর্ষের ছাত্রী ফাহিমা বেগম বিরক্তি প্রকাশ করে বলেন,
রাতে পড়ার সময় চলে বিদ্যুতের আসা-যাওয়া। দিনে কলেজে গিয়ে অসহ্য গরমের মধ্যে ক্লাস করতে হয়।
কলেজ রোডের রাঁধুনি রেস্তোরাঁর পরিচালক আতিক আহমদ জানান, ‘বিদ্যুতের দুরবস্থার কারণে ব্যবসার অবস্থা খুবই খারাপ। দীর্ঘ সময় জেনারেটর চালিয়ে পোষায় না। তাই বিদ্যুৎ চলে গেলে হোটেলের ফটক বন্ধ রাখি।’
সিলেট পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-১-এর বিয়ানীবাজার কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মোহামঞ্চদ মোস্তফা কামাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘ফেঞ্চুগঞ্জ সার কারখানাগুলোতে সার উৎপাদনের জন্য অধিক গ্যাস ব্যয় হচ্ছে। তাই গ্যাসের সংকটের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে গেছে। আমাদের চাহিদা ১৬ থেকে ১৮ মেগাওয়াট। এর বিপরীতে আমরা পাই ৪ থেকে ৫ মেগাওয়াট। এ কারণেই বিদ্যুতের লোডশেডিং বেশি হচ্ছে। সিলেটের কুমারগাওয়ে ২৫ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র হয়েছে। আগামী মাসে এটি চালু হবে। এটি চালু হলে অবস্থার উন্নতি হবে।’