শিশু সবচেয়ে বেশি মারা যাচ্ছে দুর্ঘটনায়

.
.

গত বছর দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বেড়েছে আত্মহত্যায় শিশু মৃত্যুর সংখ্যাও। আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত ‘বাংলাদেশ শিশু পরিস্থিতি-সংবাদপত্রের পাতা থেকে’ শিরোনামে এক সংবাদ সম্মেলনে এ খবর জানায় বেসরকারি সংস্থা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন।
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন ২০১৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রথম আলো, যুগান্তর, সমকাল, ইংরেজি দৈনিক নিউ এজ ও ডেইলি স্টারে শিশুদের ওপর প্রকাশিত প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে দেশের শিশু পরিস্থিতি তুলে ধরে।
সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদ গণমাধ্যমকে শিশুদের নিয়ে আরও বেশি প্রতিবেদন লেখার আহ্বান জানান। বেসরকারি সংস্থাটি জানায়, এর আগে জাতিসংঘে বাংলাদেশ থেকে শিশু পরিস্থিতির ওপর যে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে, সেটি যথেষ্ট তথ্যনির্ভর নয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন গত চার বছর ধরে তথ্য সংগ্রহ করছে। বাংলাদেশে এখন সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোও শিশু পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করে থাকে।
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন বলেছে, ২০১৪ সালে পত্রিকায় ছাপা হওয়া এক হাজার ৮৫টি খবর অনুযায়ী বিভিন্ন দুর্ঘটনায় এক হাজার ৩৯৩টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এদের ৫১৭ জনই মারা গেছে সড়ক দুর্ঘটনায়। গত বছরের মার্চে মারা গেছে ১৩৯ শিশু। নারায়ণগঞ্জ, যশোর, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও গাইবান্ধায় সড়ক দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি শিশু মারা গেছে। একই সময়ে পানিতে ডুবে ৪৬৪ জন মারা যায়।

এ ছাড়া সংবাদপত্র পর্যালোচনায় দেখা গেছে গত বছর ২০৯ শিশু আত্মহত্যা করেছে। এর আগের বছর আত্মহত্যা করে ১৬৬ জন। পরিবারের সদস্যদের ওপর রাগ, যৌন হয়রানি, পরীক্ষায় ফেল করা, প্রেমে ব্যর্থতা ও পর্নোগ্রাফির শিকার হয়ে শিশুরা আত্মহত্যা করেছে বলে উল্লেখ করা হয়।
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, কন্যাশিশুদের মধ্যে আত্মহত্যার পরিমাণ বেশি এবং তারা নতুন নতুন কারণে আত্মহত্যা করছে। এটি খুবই উদ্বেগজনক। পর্নোগ্রাফি, যৌন হয়রানির শিকার হয়ে অনেক কন্যাশিশু আত্মহত্যা করছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত এক বছরে পত্রপত্রিকায় শিশুদের নিয়ে ২৫৭টি ইতিবাচক খবর ছাপা হয়েছে। বই মেলা, চলচ্চিত্র উৎসব, বিজ্ঞান মেলা, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, জাদু, গণিত উৎসবে অংশগ্রহণ নিয়ে করা হয় প্রতিবেদনগুলো। মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের কর্মসূচি সমন্বয়কারী আবদুল্লা আল মামুন বলেন, এই অনুষ্ঠানগুলোয় মূলত শহরের স্কুল পড়ুয়া শিশুদের অংশগ্রহণ ছিল। সবার সমান অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়নি।
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন শিশুদের অধিকার রক্ষায় মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে পৃথক শিশু অধিদপ্তর গঠনের সুপারিশ করে। সংস্থাটি বলছে, তৃণমূলে মহিলা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের পাওয়া গেলেও, শিশুদের জন্য কাউকে পাওয়া যায় না।