যত নেতা, তত পক্ষ!

আগামী সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে চুয়াডাঙ্গা বিএনপিতে কোন্দল বেড়েছে। মনোনয়নপ্রত্যাশীদের ঘিরে জেলা বিএনপি চার ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। সম্ভাব্য এসব প্রার্থী অনুসারীদের নিয়ে আলাদাভাবে দলীয় কর্মসূচি পালন করছেন।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা শহরে জেলা বিএনপির চারটি কার্যালয় থেকে দলীয় কর্মসূচি আলাদাভাবে পালন করা হয়। সংসদীয় আসনভিত্তিক এসব পক্ষের নেতৃত্বে আছেন চুয়াডাঙ্গা-১ (সদর ও আলমডাঙ্গা) আসনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এবং জেলা বিএনপির (মোজামেঞ্চল-শামসুজ্জামান পক্ষ) সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান, একই পক্ষের কোষাধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর আলম ও বিএনপিতে সদ্য যোগদানকারী লে. কর্নেল সৈয়দ কামরুজ্জামান (অব.) এবং জেলা বিএনপির (অহিদুল পক্ষ) সভাপতি অহিদুল ইসলাম বিশ্বাস। আর চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে (দামুড়হুদা ও জীবননগর) জেলা বিএনপির (মোজামেঞ্চল-শামসুজ্জামান) সভাপতি মোজামেঞ্চল হক, জেলা বিএনপির (অহিদুল) পক্ষের সহসভাপতি মোখলেছুর রহমান তরফদার ও যুবদলের কেন্দ্রীয় শিল্পবিষয়ক সম্পাদক মাহমুদ হাসান খান এসব পক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
সূত্র জানায়, ২০০৯ সালের ৮ জুন মোজামেঞ্চল হককে আহ্বায়ক এবং শামসুজ্জামান ও অহিদুল ইসলাম বিশ্বাসকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে আট সদস্যের আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় কমিটি। এরপর মোজামেঞ্চল হক ও শামসুজ্জামান মিলে এবং অহিদুল ইসলাম বিশ্বাস দলের সাবেক প্রচার সম্পাদক খন্দকার আবদুল জব্বারকে সঙ্গে নিয়ে আলাদাভাবে দলীয় কর্মসূচি পালন করছেন।
একই বছরের ২৪ ডিসেম্বর গোপনে মোজামেঞ্চল হকের মালিকানাধীন বিস্কুট কারখানায় বসে জেলা বিএনপির একটি কমিটি গঠন করা হয়। এতে মোজামেঞ্চল হককে সভাপতি ও শামসুজ্জামানকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। এরপর অহিদুল ইসলাম বিশ্বাস তাঁর অনুসারীদের নিয়ে ২৮ ডিসেম্বর পাল্টা কমিটি গঠন করেন। উভয়পক্ষ নিজেদের জেলা বিএনপির বৈধ কমিটি হিসেবে দাবি করলেও কোনো পক্ষই কেন্দ্রের অনুমোদন পায়নি। শামসুজ্জামান ও অহিদুল ইসলাম বিশ্বাসের পাশাপাশি জাহাঙ্গীর আলম ও সৈয়দ কামরুজ্জামান চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী।
জেলা বিএনপির (মোজামেঞ্চল-শামসুজ্জামান) যুগ্ম সম্পাদক ওয়াহেদুজ্জামান বলেন, ‘দল যাকে মনোনয়ন দেবে, সকলে মিলে তাঁর পক্ষে কাজ করবে, এটাই নিয়ম। কিন্তু আলাদাভাবে যা করা হচ্ছে, এটা দলীয় শৃঙ্খলার মধ্যে পড়ে না।’
সৈয়দ কামরুজ্জামান বলেন, ‘আমি বিএনপি ও খালেদা জিয়ার রাজনীতি করি, কারও লেজুড়বৃত্তি করি না।’ একই কথা বলেন জাহাঙ্গীর আলম। তবে অহিদুল ইসলাম বলেন, ‘দলের বেশির ভাগ নেতা-কর্মী আমার পক্ষে আছেন।’ মাহমুদ হাসান খান বলেন, ‘মোজামেঞ্চল হকের সাংগঠনিক ব্যর্থতার কারণে আলাদা রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে হচ্ছে।’ মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘জন-সম্পৃক্ততাই এখানে মুখ্য। জনসমর্থন আদায়ের জন্য মাঠে আছি। তবে দল ন্যায্য বিবেচনায় যাকে মনোনয়ন দেবে, তাঁর পক্ষেই কাজ করব।’ মোজামেঞ্চল হকের মুঠোফোনে কল করলে তিনি ধরেননি।