সিরাজগঞ্জ ও নওগাঁয় ঝড়-শিলাবৃষ্টি, ফসল ও বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত

সিরাজগঞ্জের সদর, তাড়াশ, উল্লাপাড়া, কাজীপুর ও রায়গঞ্জ, নওগাঁর মান্দা এবং বগুড়ার আদমদীঘিতে শিলাবৃষ্টি ও ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গত শনিবার রাত থেকে শুরু করে রোববার ভোর পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে এ ঝড়বৃষ্টি হয়।
ঝড়ে বৈদ্যুতিক খুঁটি উপড়ে পড়ে সিরাজগঞ্জের তিনটি উপজেলার বেশির ভাগ গ্রাম বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। এ ছাড়া আদমদীঘির তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের টিনের ছাউনি উড়ে গেছে। আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো সংবাদ:
সিরাজগঞ্জ: গতকাল ভোররাত সাড়ে তিনটার দিকে ঝড় ও শিলাবৃষ্টি শুরু হয়। এ সময় শিলার আঘাতে তাড়াশ উপজেলার দেশিগ্রাম ও বারুহাস, সদর উপজেলার ছোনগাছা, খোকশাবাড়ি ও রতনকান্দি, কাজীপুর উপজেলার নাটুয়াপাড়া, তেকানী ও মেছরা এবং উল্লাপাড়ার উধুনিয়া ও লাহিড়ীমোহনপুর ইউনিয়নের প্রায় পাঁচ হাজার হেক্টর জমির বোরো ধান ও পাটের চারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ছাড়া ঝড়ে মৌসুমি ফল আম, কাঁঠাল ও লিচুর ক্ষতি হয়।
অপরদিকে তাড়াশ, উল্লাপাড়া ও কাজীপুরে বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে ও গাছপালা পড়ে বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে বেশির ভাগ গ্রাম বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। অর্ধশতাধিক কাঁচা বাড়িঘরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
চর-ছোনগাছা গ্রামের কৃষক আবদুল্লাহ আল মামুন ও বালুঘুঘরী গ্রামের ইয়াকুব আলী বলেন, ঝড় ও শিলের আঘাতে আম, কাঁঠাল ঝরে পড়েছে, লিচুগাছের মুকুল নষ্ট হয়ে গেছে। বোরো ধান মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। আর মাত্র এক সপ্তাহ পর ধানগুলো ঘরে তোলা যেত।
সিরাজগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জ্যেষ্ঠ মহাব্যবস্থাপক তুষারকান্তি দেবনাথ বলেন, ভেঙে পড়া খুঁটি ও ছিঁড়ে যাওয়া তার পুনঃস্থাপনের কাজ চলছে।
রায়গঞ্জ: উপজেলার ধানগড়া ও ব্রহ্মগাছা ইউনিয়নে শনিবার দিবাগত রাত ১২টা ও দুইটার দিকে দুই দফায় ঝড় ও শিলাবৃষ্টি হয়।
ব্রহ্মগাছার ভাতহাড়িয়া গ্রামের কামরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রায় ছয় বিঘা জমিতে এবার বোরো আবাদ করেছিলাম। কয়েক দিন পরই কাটা যেত। কিন্তু রাতে শিলাবৃষ্টিতে সব ধান মাটিতে ঝরে পড়েছে।’ এ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন মাহমুদ বলেন, পুরো ইউনিয়নের ধানের খেতগুলো ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এনামুল হক বলেন, প্রাথমিক হিসাবমতে দুই ইউনিয়নে ২ হাজার ১৭০ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। এর মধ্যে বোরো ধানই সবচেয়ে বেশি।
আদমদীঘি: শনিবার রাত পৌনে ১১টার দিকে নওগাঁর মান্দা উপজেলার পরানপুর, ভালাইন, মান্দা, কুসুম্বা, গণেশপুর, নুরুল্লাবাদ, কশব, মৈনম, কাঁশোপাড়া ও বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঝরে গেছে অসংখ্য গাছের কাঁচা আম ও লিচু। ঘরবাড়ির টিনের ছাউনিসহ গাছপালা উপড়ে পড়েছে। এ ছাড়া ঝড়ে রেবা আখতার আলিম মাদ্রাসা, মান্দা থানা আদর্শ বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজ, এনায়েতপুর আইডিয়াল উচ্চবিদ্যালয়ের টিনের ছাউনি উড়ে গেছে।