অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে জমি বিক্রি ও দুর্নীতির অভিযোগ

রংপুরের পীরগাছা উপজেলার চৌধুরানী ফাতেহিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ খাদেমুল ইসলামের বিরুদ্ধে মাদ্রাসার জমি বিক্রি, বন্ধক, সংরক্ষিত তহবিলের টাকা আত্মসাৎসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অধ্যক্ষের অনিয়ম ও দুর্নীতি তদন্ত সাপেক্ষে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মাদ্রাসার সব শিক্ষক, কর্মচারীরা জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ (ইউএনও) সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কৈকুড়ী ইউনিয়নের ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ক্ষমতার অপব্যবহার করে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্ত ছাড়াই মাদ্রাসার আট একর জমি ছয় লাখ টাকা বন্ধক রাখেন। একইভাবে তিনি ১ দশমিক ৪৮ একর জমি প্রায় ৪০ লাখ টাকায় বিক্রি করে সব টাকা আত্মসাৎ করেন। সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, অধ্যক্ষ মাদ্রাসায় নেই। ৮ সেপ্টেম্বর থেকে হাজিরা খাতায় তাঁর স্বাক্ষর নেই এবং ছুটির দরখাস্তও নেই।
অধ্যক্ষের অনুপস্থিতির কারণ জানতে চাইলে শিক্ষক-কর্মচারীরা বলেন, তিনি দুই বছর ধরে নিয়মিত মাদ্রাসায় আসেন না। মাঝেমধ্যে খুব সকালে এসে নৈশপ্রহরীর মাধ্যমে দরজা খুলে হাজিরা খাতায় সই করে চলে যান। মাদ্রাসার শিক্ষক শহিদুল ইসলাম, ওসমান গণি ও লিয়াকত আলী বলেন, অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গত ২৯ জুন জেলা প্রশাসক ও ইউএনওসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করা হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো তদন্ত করা হয়নি।
মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ এ জেড এম রুহুল কুদ্দুছ বলেন, ২০০৯ সালের ৩০ জুন থেকে আলিম এবং চলতি বছরের ৩০ জুন থেকে ফাজিল শাখার মঞ্জুরি নেই এবং অধ্যক্ষ মঞ্জুরি নবায়ন করারও কোনো উদ্যোগ নেননি। তিনি আরও বলেন, দুই বছর ধরে অধ্যক্ষ নিয়মিত মাদ্রাসায় না এসেও বেতন-ভাতা উত্তোলন করছেন। এতে মাদ্রাসার প্রশাসনিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। তিনি মাদ্রাসাটিকে ধ্বংস করে দিয়েছেন।
অধ্যক্ষ খাদেমুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি অনিয়ম ও দুর্নীতির কথা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, মাদ্রাসার জমি কমিটির সদস্যদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিক্রি করা হয়েছে। নিয়মিত না এসেও বেতন-ভাতা উত্তোলন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি শেখ মো. নূরুল ইসলাম বলেন, মাদ্রাসার জমি বিক্রি ও বিভিন্ন অনিয়মের কারণে অধ্যক্ষকে ১৩ মে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি এর কোনো জবাব দেননি। মাদ্রাসার জমি বিক্রির ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্ত ছাড়াই অধ্যক্ষ জমি বিক্রি করেছেন, জমি বিক্রির বিষয়ে আমি বা পরিচালনা কমিটির সদস্যরা কিছুই জানি না। কমিটির সভা ডেকে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’