শ্রীপুর থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা হয়রানি বাড়াচ্ছে

গাজীপুরের শ্রীপুর মডেল থানায় উৎকোচের বিনিময়ে একই ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলা করা হচ্ছে। তদন্ত ছাড়াই তৈরি করা হচ্ছে প্রাথমিক তথ্য বিবরণীর প্রতিবেদন। এতে হয়রানির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। গতকাল সোমবার শ্রীপুর উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় সদস্যরা এ অভিযোগ করেন।
শ্রীপুর উপজেলা কৃষি প্রশিক্ষণকেন্দ্রে অনুষ্ঠিত ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাজমুল ইসলাম ভূঁইয়া।
সভার সদস্য শেখ হুমায়ুন কবির বলেন, বর্তমানে শ্রীপুর থানায় কাউন্টার (পাল্টাপাল্টি) মামলার সংখ্যা বেড়ে চলেছে। বিশেষ করে জমিসংক্রান্ত বিরোধ থেকে হামলা-সংঘর্ষের জেরে এসব মামলার সৃষ্টি হচ্ছে। প্রকৃত ভুক্তভোগী বা নির্যাতিত ব্যক্তিরা থানায় মামলা করার কয়েক দিন পরই পাল্টা মামলা হচ্ছে। পাল্টা মামলায় সাধারণত তৃতীয় পক্ষের কোনো লোক বাদী হচ্ছেন। এতে হয়রানি, অবিচার ও নির্যাতনের পরিমাণ বাড়ছে।
সভায় গাজীপুর জেলা জজ আদালতের আইনজীবী এমদাদুল হক বলেন, শ্রীপুর থানার পাল্টা মামলার সংখ্যা আগের চেয়ে বেশি পাওয়া যাচ্ছে। এসব ঘটনায় দুর্নীতি বাড়ে ও নির্দোষ মানুষ হয়রানির শিকার হন। আইনজীবী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরাও এসব মামলার ব্যাপারে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
মিথ্যা মামলা দিয়ে শ্রীপুরের গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য সাহাব উদ্দিন ঢালী ও তাজুল ইসলামকে হয়রানি করা হচ্ছে বলে সভায় অভিযোগ করেন ওই ইউপির চেয়ারম্যান আকরাম হোসেন।
সভায় থানায় পাল্টাপাল্টি মামলার অভিযোগের ব্যাপারে কথা হয় শ্রীপুর থানা রোডের একাধিক বাসিন্দার সঙ্গে। তাঁরা জানান, থানায় ঢোকার আগেই সত্য-মিথ্যা মামলা সাজাতে বেশ কয়েকজন দক্ষ পেশাদারি মামলা লেখক অপেক্ষায় থাকেন। তাঁরা থানা রোডের বিভিন্ন কম্পিউটার দোকানে বসেন। তাঁরা একই ঘটনার বাদীকে বিবাদী করে আবার বিবাদীকে বাদী করে মামলা করতে উৎসাহিত করছেন।
এসব বিষয়ে বক্তব্যের সময় শ্রীপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমির হোসেন সভায় উপস্থিত ছিলেন না। তাঁর প্রতিনিধি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মহসিনুল কাদির উপস্থিত থাকলেও পাল্টা মামলাগুলোর ব্যাপারে তিনি কোনো বক্তব্য দেননি।
মুঠোফোনে জানতে চাইলে ওসি আমির হোসেন বলেন, অনেক ক্ষেত্রে আদালতের নির্দেশ থাকায় মামলা করতে হয়। হামলা-সংঘর্ষের ঘটনায় সৃষ্ট প্রকৃত মামলার চিকিৎসা সনদ বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে দেওয়া হয়। পাল্টা মামলার ক্ষেত্রে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসা সনদ নেওয়া হয়। ঘুষের বিনিময়ে পাল্টা মামলা নেওয়ার অভিযোগ মিথ্যা।
ওসি জানান, গত আগস্টে শ্রীপুর থানায় ৬০টি ও সেপ্টেম্বরে গতকাল বিকেল পর্যন্ত ৫৩টি মামলা হয়েছে।