মাছ মরে ভেসে উঠছে নাগর নদে

বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় নাগর নদে মরা মাছ ভেসে উঠছে। এই সুযোগে আশপাশের কয়েকটি গ্রামের মানুষ গতকাল শনিবার ভোর থেকে মাছ ধরায় মেতে উঠেছেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, নদে পচা তরমুজ ও অন্যান্য ফলফলাদি ফেলায় পানি দূষিত হয়ে পড়েছে। ফলে নদের পানির রং পরিবর্তন হয়ে গেছে এবং মাছ মরে ভেসে উঠছে।
গতকাল দুপুর ১২টার দিকে সরেজমিন দেখা যায়, নদের পানি একটু কালো হয়ে গেছে। কিছু তরমুজের খোসা ভেসে যাচ্ছে। নদে ছোট ছোট কিছু মরা মাছ ভেসে আছে। কিছু কিছু মাস আধমরা হয়ে ভেসে উঠছে। আশপাশের গ্রামের কয়েক শ লোক জাল দিয়ে এসব মাছ ধরার চেষ্টা করছেন। নারী-পুরুষেরা ঠেলা জাল ও বড় জাল দিয়ে মাছ ধরছেন। কেউ কেউ বাড়ির মশারি দিয়ে ভেসে ওঠা মাছ ধরছেন। থানা বাসস্ট্যান্ড থেকে কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে মাছ ধরার এ উৎসব চলছে।
মাছ ধরার ফাঁকে কথা হয় ওই সব গ্রামের লোকজনের সঙ্গে। নয়াপাড়া গ্রামের মজনু প্রামাণিক, ধোকরকোলা গ্রামের পারভিন বেগম ও চকসুখানগাড়ী গ্রামের সাজু আহম্মেদ অভিযোগ করেন, উপজেলার থানা বাসস্ট্যান্ডে তরমুজ ব্যবসায়ীরা গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পচা তরমুজ ফেলে দেওয়ায় নদের পানি নষ্ট হয়েছে। এ ছাড়া কাহালুর বীরকেদার গ্রামে অবস্থিত পেপার মিলের বর্জ্য ও পানি নদে ফেলায় এমনটি হয়েছে। ফলে গত শুক্রবার রাত থেকেই পানি কালো হয়ে যায়। এর পরপরই নদের মাছ ভেসে ওঠে।
কারখানার বর্জ্য ফেলে পানি নষ্ট করার অভিযোগে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে উপজেলার থানা বাসস্ট্যান্ডে অবস্থিত কয়েকজন তরমুজ ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, পচে যাওয়ায় অনেক ব্যবসায়ী তরমুজ রাতে নদে ফেলছেন।
দুপচাঁচিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোপাল চন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, ‘শুক্রবার বিকেল থেকেই কয়েক শ লোক মাছ ধরার জন্য নদে নেমেছেন। তরমুজ ব্যবসায়ীরা এমন কাজ করে থাকলে ঠিক করেননি। আমি বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। প্রয়োজন হলে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে দেওয়া হবে।’
দুপচাঁচিয়ার অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পচা ফলমূল পানিতে ফেললে গ্যাস তৈরি হয়। এ কারণে পানিতে অক্সিজেনের অভাব দেখা দেয়। এতে মাছ ও পোকামাকড় মারা যায়। পানি পরিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত ওই পানি ব্যবহার করা যাবে না।