নারী লাঞ্ছনার প্রতিবাদকারীরাই লাঞ্ছিত

ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কার্যালয় ঘেরাও করতে গেলে আন্দোলনকারীদের ওপর চড়াও হয় পুলিশ। ছবি: সাজিদ হোসেন
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কার্যালয় ঘেরাও করতে গেলে আন্দোলনকারীদের ওপর চড়াও হয় পুলিশ। ছবি: সাজিদ হোসেন

পয়লা বৈশাখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় নারী লাঞ্ছনার ঘটনায় ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কার্যালয় ঘেরাওয়ের কর্মসূচিতে পুলিশ দফায় দফায় বাধা দিয়েছে। একপর্যায়ে আন্দোলনকারীদের ওপর চড়াও হয় পুলিশ। এতে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। 

ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কার্যালয় ঘেরাও করতে গেলে আন্দোলনকারীদের ওপর চড়াও হয় পুলিশ। ছবি: মনিরুল আলম
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কার্যালয় ঘেরাও করতে গেলে আন্দোলনকারীদের ওপর চড়াও হয় পুলিশ। ছবি: মনিরুল আলম

নারী লাঞ্ছনার ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করতে না পারা এবং ছয় দফা দাবিতে আজ রোববার ডিএমপি কার্যালয় ঘেরাওয়ের কর্মসূচি দেওয়া হয়। ছাত্র ইউনিয়নের নেতৃত্বে ‘পাল্টা আঘাত’ ব্যানারে গত ৭ মে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
পূর্বঘোষণা অনুযায়ী আজ বেলা সোয়া ১২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন আন্দোলনকারীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাস ঘুরে শাহবাগ দিয়ে ডিএমপি কার্যালয় অভিমুখে যাওয়ার চেষ্টা করে। সেখানে বাধা পেয়ে কার্জন হলের দিক দিয়ে ডিএমপি কার্যালয় অভিমুখে যাওয়ার চেষ্টা করে।

ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে বাধা দেয় পুলিশ। ছবি: মনিরুল আলম
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে বাধা দেয় পুলিশ। ছবি: মনিরুল আলম

পুলিশের কয়েক দফা বাধা পেরিয়ে আন্দোলনকারীরা কার্জন হল, হাইকোর্ট মোড় পেরিয়ে ডিএমপির কার্যালয়ের কাছাকাছি শহীদ ক্যাপটেন মনসুর আলী সরণি পর্যন্ত যায়। সেখানে বাধা পেয়ে তাঁরা সড়কে বসে পড়েন। আন্দোলনকারীরা সেখানে পুলিশের বিরুদ্ধে নানা বক্তব্য ও স্লোগান দিতে থাকেন। ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি হাসান তারেক বলেন, ‘এখানে যতসংখ্যক পুলিশ আমাদের বাধা দিচ্ছে, বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে তারা থাকলে নারী লাঞ্ছনার ঘটনা ঘটত না। 

ডিএমপি কার্যালয় ঘেরাও করতে গিয়ে পুলিশের বাধার মুখে সড়কে প্রতিবাদী সমাবেশ করেন আন্দোলনকারীরা। ছবি: মনিরুল আলম
ডিএমপি কার্যালয় ঘেরাও করতে গিয়ে পুলিশের বাধার মুখে সড়কে প্রতিবাদী সমাবেশ করেন আন্দোলনকারীরা। ছবি: মনিরুল আলম

একপর্যায়ে আন্দোলনকারীদের ব্যবহার করা মাইক কেড়ে নেয় পুলিশ। তারা আন্দোলনকারীদের লাঠিপেটা, বন্দুকের বাঁট দিয়ে আঘাত ও বুট দিয়ে লাথি মারে।
এতে আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। তাঁরা পুলিশের দিকে ইটপাটকেল ছোড়েন। পুলিশ জলকামান দিয়ে পানি ছোড়ে। কাঁদানে গ্যাসও ছোড়ে। এভাবে কিছুক্ষণ চলার পর পরিস্থিতি শান্ত হয়। আন্দোলনকারীরা সেখান থেকে সরে আসেন।

ডিএমপি কার্যালয় ঘেরাও করতে গিয়ে পুলিশের বাধার মুখে সড়কে প্রতিবাদী সমাবেশ করেন আন্দোলনকারীরা। ছবি: মনিরুল আলম
ডিএমপি কার্যালয় ঘেরাও করতে গিয়ে পুলিশের বাধার মুখে সড়কে প্রতিবাদী সমাবেশ করেন আন্দোলনকারীরা। ছবি: মনিরুল আলম

ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি হাসান তারেকের দাবি, পুলিশি হামলায় তিনিসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।

ডিএমপি কার্যালয় ঘেরাও করতে যাওয়ার আগে রাজু ভাস্কর্যের সামনে প্রতিবাদী সমাবেশ করেন আন্দোলনকারীরা। ছবি: মনিরুল আলম
ডিএমপি কার্যালয় ঘেরাও করতে যাওয়ার আগে রাজু ভাস্কর্যের সামনে প্রতিবাদী সমাবেশ করেন আন্দোলনকারীরা। ছবি: মনিরুল আলম

ঘটনার বিষয়ে পুলিশের রমনা জোনের উপকমিশনার (ডিসি) আবদুল বাতেন বলেন, ‘আমরা আন্দোলনকারীদের বারবার বলেছি, আপনারা দাবির বিষয়ে প্রতিনিধি দল পাঠান। কিন্তু তাঁরা তা করেননি। তাঁরা রাস্তা বন্ধ করে রেখে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করেছেন। তাই জনদুর্ভোগ লাঘবে আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করেছি।’