জাহাঙ্গীরনগরের শিক্ষক লাঞ্ছনায় সার্জেন্ট সাময়িক বরখাস্ত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রাকিব আহমেদকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় আজ রোববার সার্জেন্ট ইরমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশের পক্ষ থেকে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পাঠানো খুদে বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির আলটিমেটাম
শিক্ষক লাঞ্ছনায় জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিচারের জন্য ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি। রাকিব এই সমিতির সাবেক সভাপতি। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আজ দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার সামনে মানববন্ধন করে সাংবাদিক সমিতি। এই মানববন্ধন থেকে দায়ী পুলিশ সদস্যদের বিচারের জন্য সময় বেঁধে দেন সমিতির বর্তমান সভাপতি মাসুম বিল্লাহ।

মানববন্ধনে অংশ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, সরকারের অর্জন ভূলুণ্ঠিত করার মতলব নিয়ে পুলিশের ওই সদস্যরা এ কাজ করতে পারেন। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে দায়ী পুলিশ সদস্যদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান তিনি। শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, ইদানীং দেখা যাচ্ছে, পুলিশ নিজেদের আচরণবিধি ও অধিকার সম্পর্কে ভুলে যাচ্ছে। এ ধরনের ঘটনা ঘটতে থাকলে পুলিশের প্রতি সাধারণ মানুষের শ্রদ্ধা উঠে যাবে।

জাহাঙ্গীরনগরের শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ
শিক্ষক লাঞ্ছনার প্রতিবাদে এবং দোষী পুলিশ সদস্যদের শাস্তির দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আজ দুপুর  সাড়ে ১২টা থেকে বেলা তিনটা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। পরে কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে তাঁরা অবরোধ তুলে নেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী রাকিব আহমেদের ভাষ্য, গতকাল রাত ১০টার দিকে সিলেট যাওয়ার জন্য তিনি তাঁর মা-বাবাকে নিয়ে ব্যক্তিগত গাড়িতে করে বিমানবন্দর রেলস্টেশনে যাচ্ছিলেন। গাড়ি উত্তরা হাউস বিল্ডিং এলাকায় পৌঁছালে ইমরান নামের ট্রাফিক উত্তরের এক সার্জেন্ট গাড়ি থামাতে বলেন। গাড়ি থামানোর পর ওই কর্মকর্তা গাড়ির কাগজপত্র তলব করেন। তিনি তাঁর (রাকিব) গাড়িচালক কাগজপত্র দেখান। কাগজপত্র হাতে নেওয়ার পর ওই কর্মকর্তা গাড়ি জব্দ করা হবে বলে জানান। এমন পরিস্থিতিতে তিনি (রাকিব) ওই কর্মকর্তাকে অনুরোধ করেন, তিনি মা-বাবাসহ সিলেট যাচ্ছেন। ট্রেন ১০টা ২০ মিনিটে। তিনি ওই কর্মকর্তাকে গাড়ির কাগজপত্র রেখে দিয়ে তাঁদের রেলস্টেশন পর্যন্ত যাওয়ার সুযোগ করে দিতে অনুরোধ করেন। এর পরও ওই কর্মকর্তা রাজি হচ্ছিলেন না। পরে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বলে পরিচয় দেন। কিন্তু এতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা। বিশ্ববিদ্যালয় ও তাঁর মা-বাবাকে নিয়ে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতে করতে ওই কর্মকর্তা তাঁর গলা চেপে ধরেন। ওই সময় আশপাশে থাকা আরও কয়েকজন পুলিশ তাঁকে মারধর করতে থাকেন। একপর্যায়ে তাঁকে টেনেহিঁচড়ে পুলিশ বক্সের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়।