সেনাবাহিনীতে চাকরি দেওয়ার কথা বলে টাকা আত্মসাৎ

সেনাবাহিনীতে চাকরি দেওয়ার নামে ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে চার যুবকের কাছ থেকে প্রায় ২০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। নওগাঁ সদর উপজেলার রাইঝোড় গ্রামের একটি পরিবার এই টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ব্যাপারে নওগাঁর শ্রীধরপুর গ্রামের রুহুল আমীন বাদী গত ২৫ জুলাই ওই পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে সদর থানায় একটি প্রতারণা মামলা দায়ের করেন।
এলাকাবাসী ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, রাইঝোড় গ্রামের মোকছেদ আলী, তাঁর ছেলে সেনাসদস্য আসাদুল ইসলাম ও ভাগনি মরিয়ম বেগম চার যুবক মারুফ হাসান, রুহুল আমীন, আবু হাসান ও আরিফ হোসেনের কাছ থেকে এসএ পরিবহনের মাধ্যমে ও নগদে মোট ২০ লাখ টাকা নেন। এরপর ওই চার যুবককে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরে যোগদানের জন্য নিয়োগপত্র দেওয়া হয়। এতে রিক্রুটিং কর্মকর্তা হিসেবে একজন মেজরের স্বাক্ষর দেখানো হয়েছে। আবু হাসান ও আরিফ গত ১৮ জুন, মারুফ ২৫ জুন ও রুহুল ২৬ জুন চট্টগ্রামে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে রক্ত পরীক্ষার জন্য গিয়ে নিয়োগপত্রগুলো ভুয়া বলে জানতে পারেন।
মারুফ হাসানের বড় ভাই ময়নুল হাসান বলেন, ‘আসাদুল সেনাবাহিনীতে নিয়োগ পাওয়ার পর ট্রেনিং শেষে ছুটিতে গ্রামে এলে মোকছেদ ও মরিয়ম তাঁদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের ভালো যোগাযোগ আছে বলে জানান। আমার ভাইসহ চারজনকে বিশেষ কোটায় নিয়োগ দেওয়া হবে জানালে মোকছেদ ও মরিয়মের পরামর্শে এসএ পরিবহনের নওগাঁ অফিস থেকে চট্টগ্রামে রুনু নামের একজনের কাছে গত ১৯ মে ৯০ হাজার টাকা, ১৯ জুন তিন লাখ ১৫ হাজার, ২০ জুন তিন লাখ ও ১২ জুন জয় নামের আরেক জনের কাছে ছয় লাখ ৫০ হাজার টাকা পাঠিয়েছি।’
এসএ পরিবহনের চালান ফরমে থাকা প্রাপকের মুঠোফোনে রুনুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি রুনু নই, আমার নাম শরিফুল।’ শরিফুল মোকছেদের শ্যালক বলে জানা গেছে।
আসাদুল নয় মাস আগে সেনাবাহিনীতে সৈনিক হিসেবে যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম সেনানিবাসে কর্মরত বলে জানা গেছে। তিনি মুঠোফোনে এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘আপনি সম্ভবত ভুল করছেন। আমি এ ব্যাপারে কিছুই জানি না।’
নওগাঁ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হক জানান, মামলাটি বর্তমানে সিআইডিতে স্থানান্তর করা হয়েছে। সিআইডির উপপরিদর্শক (এসআই) মহসিন আলী জানান, গত ২৮ আগস্ট মামলাটি সিআইডিতে গ্রহণ করা হয়। এ বিষয়ে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। মোকছেদ বর্তমানে জামিনে রয়েছেন।
মোকছেদ মুঠোফোনে বলেন, ‘আমি এ ব্যাপারে কিছু জানি না।’