মধুখালীতে ১৫০টি বাড়ি বিলীন

ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার কামারখালী ইউনিয়নে মধুমতী নদীর ভাঙন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ইতিমধ্যে ভাঙনের কবলে পড়েছে কামারখালী-সালামতপুর সড়ক। কামারখালী থেকে বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর এবং বীরশ্রেষ্ঠের বাড়িতে যাওয়ার এটি একমাত্র রাস্তা। এ ছাড়া গত ১০ দিনে ওই এলাকার তিনটি গ্রামের দেড় শ বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
গত বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, এলজিইডির মালিকানাধীন কামারখালী-সালামতপুর সড়কের ঋষী বটতলা, গন্ধখালী ও রাজধারপুর এলাকায় রাস্তা নদীর ভাঙনের কবলে পড়েছে। এর মধ্যে ঋষী বটতলা এলাকায় ভাঙন ভয়াবহ। এখানে সড়কটি ভেঙে সরু হয়ে গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, গন্ধখালী এলাকায় ১০০ ফুট ও রাজধারপুর অংশে ৩০ ফুটজুড়ে ভাঙন চলছে। এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, নদীর তীর ধরে রাজধারপুর থেকে গন্ধখালী পূর্বপাড়া পর্যন্ত তিন কিলোমিটারজুড়ে ফুলবাড়িয়া, রাজধারপুর ও পূর্ব গন্ধখালী—এই তিনটি গ্রামে ভাঙন চলছে। ফুলবাড়িয়া গ্রামের তাহেরুননেসা বেগম জানান, গত ১০ দিনে গ্রামের ৬০টি বাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। পূর্ব গন্ধখালী গ্রামের সাদ্দাম হোসেন জানান, গ্রামের আইউব মোল্লার বাড়ির সামনে সড়কের ভাঙন ঠেকাতে এক সপ্তাহ আগে বাঁশ দিয়ে একটি বেড়া নির্মাণ করা হয়। কিন্তু গত বুধবার সেটি ভেঙে পড়েছে। এ ভাঙন রোধে এখনই ব্যবস্থা না নিলে বীরশ্রেষ্ঠের জাদুঘরে যাওয়ার পথ বন্ধ হয়ে যাবে।
গন্ধখালী এলাকার শামীম মৃধা জানান, গত ১০ দিনে এই গ্রামের ৪০টি বসতবাড়ি ভেঙে গেছে। এ ছাড়া গন্ধখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বীরশ্রেষ্ঠ আব্দুর রউফ উচ্চবিদ্যালয় ভাঙনকবলিত এলাকা থেকে দেড় শ গজের মধ্যে রয়েছে। রাজধারপুর গ্রামের ওসমান শেখ জানান, মধুমতী নদীর ভাঙনের ফলে গত ১০ দিনে গ্রামের ৫০টি বসতবাড়ী নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কামারখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান বলেন, ভাঙন রোধে উপজেলা থেকে বাঁশের বেড়া দেওয়া হয়েছিল, বালুর বস্তাও ফেলা হয়েছিল, কিন্তু তা কাজে আসেনি। ভাঙনকবলিত দেড় শ পরিবারের তালিকা করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ফরিদপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল মতিন সরকার বলেন, কামারখালীতে মধুমতী নদীর ভাঙন রোধে জলবায়ু ট্রাস্ট তহবিলের আওতায় ১০ কোটি টাকার দুটি প্রকল্প গত অর্থবছরেই জমা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই প্রকল্প দুটি পাস না হওয়ায় কাজে হাত দেওয়া যায়নি।