ছাত্রলীগের সমাবেশে দফায় দফায় সংঘর্ষ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৩৪তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপল‌ক্ষে আজ রোববার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ছাত্রলীগের সমাবেশে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

জানা গেছে, দিবসটি উপল‌ক্ষে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বানে সারা দেশ থেকে জেলা-উপজেলা শাখার কর্মীরা সমাবেশে আসে। সমাবেশে বক্তৃতা পর্ব চলাকালে অন্তত চারবার নেতা-কর্মীরা নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। বেলা আড়াইটার দিকে শুরু হওয়া সমাবেশের পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হওয়ার কথা থাকলেও তা না করেই কর্মসূচি শেষ করতে হয়েছে।

কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, দুপুরে বিভিন্ন দিক থেকে মিছিল নিয়ে সংগঠনের নেতা-কর্মীরা শহীদ মিনারে আসতে থাকেন। বেলা দেড়টার দিকে সামনের সারিতে বসাকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল শাখা ছাত্রলীগ ও সিদ্ধেশ্বরী শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি ও বাগ্‌বিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। এতে সংঘর্ষের আশঙ্কায় উপস্থিত অনেকেই ছোটাছুটি করে অন্য দিকে চলে যায়। তবে কেন্দ্রীয় নেতারা তাৎক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।

জহুরুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল নাহিয়ান খান বলেন, মারামারির মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি। সিদ্ধেশ্বরী কলেজের ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মীর মধ্যে বসা নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়েছে। তবে বড় কোনো ঘটনা ঘটেনি।

সামনে বসাকে কেন্দ্র করে বেলা দুইটার দিকে মাস্টারদা’ সূর্যসেন হল শাখা ও ঢাকা জেলা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যেও হাতাহাতি হয়। তবে সূর্যসেন হলের সাধারণ সম্পাদক আরেফিন সিদ্দিক হাতাহাতির ঘটনা অস্বীকার করেছেন।

বেলা সাড়ে তিনটার দিকে কিশোরগঞ্জ জেলা ও নেত্রকোনা জেলা শাখার নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদিতে ওঠার পথে ছাত্রলীগ নেতাদের বাধার সম্মুখীন হন। তার পরও তাঁরা স্লোগান দিতে দিতে বেদির দিকে এগিয়ে গেলে উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে কেন্দ্রীয় কয়েকজন নেতা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।

পোস্টার, ব্যানারে সমাবেশের পর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের কথা থাকলেও এমন বিশৃঙ্খল অবস্থায় বক্তৃতা পর্ব শেষ হওয়ার পরপরই সমাবেশের সমাপ্তি টানেন ছাত্রলীগের সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান।

এদিকে অনুষ্ঠান শেষে সন্ধ্যায় ফেরার পথে তিতুমীর কলেজ ও ঢাকা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা নিজেদের মধ্যে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। এ ছাড়া, বিচ্ছিন্নভাবে আরও একাধিক পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। একজনকে ধাওয়া করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভেতরে নিয়ে গিয়ে অপরপক্ষ পিটিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের সামনে একজনের পাঞ্জাবি টেনে-হিঁচড়ে ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। তবে এঁদের কাউকে চিহ্নিত করা যায়নি।

ছাত্রলীগের সমাবেশ চলাকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শাহবাগ, নীলক্ষেত, কার্জন হল ও গুলিস্তান এলাকায় কয়েক শ গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখায় দুপুর থেকেই এই এলাকায় ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। এর প্রভাব পড়ে পুরো রাজধানী জুড়েই।

ছাত্রলীগের সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামানের সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে সমাবেশে বক্তব্য দেন তোফায়েল আহমেদ, আমির হোসেন আমু, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, দিপু মণি, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম প্রমুখ।