তিন শিশুকন্যার 'ঘাতক' বাবা গ্রেপ্তার

কক্সবাজারের চকরিয়ায় তিন শিশুকন্যাকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় বাবা আবদুল গণিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশ বলেছে, আজ সোমবার ভোর পাঁচটায় চট্টগ্রাম মহানগরের অক্সিজেন মোড়ের বাগদাদ হোটেলের পাশের গলি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

আবদুল গণি চকরিয়া উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের সাত নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব পুকুরিয়া গ্রামের মৃত আবদুল করিমের ছেলে।
পুলিশ বলেছে, গত শুক্রবার ভোররাত তিনটার দিকে আবদুল গণি তাঁর তিন শিশুকন্যাকে গলা কেটে হত্যা করেন।
আজ বেলা ১১টায় চকরিয়া থানায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কক্সবাজারের সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল-চকরিয়া) মো. মাসুদ আলম বলেন, প্রযুক্তি ও সোর্সের মাধ্যমে আবদুল গণির অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে বায়েজিদ থানা এলাকায় অভিযান চালানো হয়। সেখানে তাঁর বোনের বাসার পাশ থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার হওয়ার পর আবদুল গণি সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, স্ত্রী ফাতেমা বেগম তাঁর এক আত্মীয়ের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। এ কারণে স্ত্রীকে ২০১২ সালে একবার তালাক দেন তিনি। পরে আর কোনো ‘খারাপ কাজে’ জড়িত হবেন না বলে শপথ করলে তিনি স্ত্রীকে ঘরে তোলেন। কিন্তু এরপর ওই পরকীয়ার সম্পর্ক আরও জোরদার হয়। ঘটনার দিন রাতেও তাঁর স্ত্রী ঘরে ছিলেন না। এ কারণে তাঁর ছোট মেয়ে শারাবান তাহুরা মায়ের দুধ খেতে না পেয়ে চিৎকার করতে থাকলে তিনি সহ্য করতে না পেরে এক সঙ্গে তিন মেয়েকে গলা কেটে হত্যা করেন। আবদুল গণি বলেন, তিন মেয়েকে খুন করার পর এখন তিনি অনুতপ্ত।
তবে গণির স্ত্রী ফাতেমা বেগম ঘটনার দিন (শুক্রবার) দাবি করেছিলেন, আবদুল গণি তাঁর এক আত্মীয়ের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়লে তাঁদের মধ্যে দাম্পত্য কলহের সৃষ্টি হয়। ঘটনার কয়েকদিন আগে থেকেই গণি বাসার কোনো খরচ দিচ্ছিলেন না। এক সময় নিরুপায় হয়ে ফাতেমা বৃহস্পতিবার স্থানীয় ইউপি সদস্য খায়রুল বাশারের কাছে বিচার দিলে ইউপি সদস্য গণিকে বকাঝকা করেন। ওই সময় গণি বিচার দেওয়ায় ফাতেমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেন। তাই ভয়ে ফাতেমা ঘরে না গিয়ে এক আত্মীয়ের বাড়িতে রাত কাটান। এরই মাঝে রাতে আবদুল গণি তাঁর তিন মেয়েকে হত্যা করেন।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রভাষ চন্দ্র ধর বলেন, নিজ হাতে তিন কন্যাকে হত্যার কথা স্বীকার করে আজ দুপুরে চকরিয়া জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন আবদুল গণি। আদালত তাঁকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে ১৬ মে রাতে ফাতেমা বেগম বাদী হয়ে আবদুল গণি, তাঁর মা মনোয়ারা বেগম ও ভাই আবদুল হামিদকে আসামি করে থানায় মামলা করেন।