পটিয়া উচ্চবিদ্যালয়ে কমিটি নেই পাঁচ বছর

দক্ষিণ চট্টগ্রামের প্রাচীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পটিয়া আদর্শ উচ্চবিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি নেই পাঁচ বছর। এতে বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও উন্নয়নকাজ থমকে আছে। এ ছাড়া শিক্ষক সংকটের কারণে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা। মামলাজনিত জটিলতার কারণে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ থাকায় ২০০৬ সাল থেকে সহকারী প্রধান শিক্ষক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৮৪৫ সালে পটিয়া সদরে প্রতিষ্ঠিত পটিয়া আদর্শ উচ্চবিদ্যালয় যুগ যুগ ধরে পরিচালনা কমিটির তত্ত্বাবধানে সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হয়ে আসছিল। কিন্তু গত পাঁচ বছর ধরে মামলাজনিত জটিলতার কারণে বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটি না থাকায় দৈনন্দিন কাজ ছাড়া শিক্ষক নিয়োগসহ গুরুত্বপূর্ণ কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০০৯ সালের শুরুতে নির্বাচনের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের নতুন পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু ওই কমিটি চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকা অবস্থায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় কমিটি গঠনসংক্রান্ত নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করে। এতে ইতিমধ্যে নির্বাচিত কমিটি অকার্যকর হয়ে যায়। এরপর বিদ্যালয় পরিচালনার জন্য একটি এডহক কমিটি গঠন করা হয়।
এদিকে এডহক কমিটি বাতিল ও নির্বাচিত কমিটি বহাল রাখার আবেদন এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুন প্রজ্ঞাপণের প্রতি চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ওই কমিটির চার সদস্য বাদী হয়ে একই বছর উচ্চ আদালতে একটি রিট আবেদন দায়ের করেন। আদালত রিট গ্রহণ করে এডহক কমিটির কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করেন।
সূত্র জানায়, ২০১১ সালের ১৩ অক্টোবর উচ্চ আদালতের দুই বিচারপতির সমম্বয়ে গঠিত বেঞ্চ ইতিপূর্বে নির্বাচিত কমিটির মেয়াদ শেষে নতুন কমিটি নির্বাচন এবং নির্বাচিত কমিটির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের আদেশ দেন। কিন্তু এখনো রায়ের কপি না পাওয়ায় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনো কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারছে না।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তুষার কান্তি দাশ প্রথম আলোকে বলেন, বর্তমানে বিদ্যালয়ে এক হাজার ২০০ জন শিক্ষার্থীর জন্য অন্তত ২৪ জন শিক্ষক প্রয়োজন। কিন্তু এমপিওভুক্ত শিক্ষক রয়েছেন ১১ জন। কমিটি না থাকায় নতুন শিক্ষক নিয়োগ করা যাচ্ছে না। অস্থায়ী ভিত্তিতে আট জন শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে কাজ চালানো হলেও এসব শিক্ষক ভাল বেতনের চাকরি পেলে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। এ ছাড়া কমিটির অভাবে সিদ্ধান্ত নিতে না পারায় কয়েকটি জরাজীর্ণ ভবনসহ অবকাঠামোগত উন্নয়নকাজ আটকে আছে।
বিদ্যালয়ের পক্ষে মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবী সাইফুদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী বলেন, রায় লেখা হলেও তাতে মাননীয় বিচারকদের সই না হওয়ায় রায়ের সত্যায়িত নকল কপি নেওয়া যাচ্ছে না।