মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৬ করার প্রস্তাব বাতিলের দাবি

শর্তসাপেক্ষে মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স ১৬ বছর করার সরকারি প্রস্তাব বাতিলের দাবি জানিয়েছে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি নামের একটি মোর্চা। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুমকি দেওয়া হয়েছে।

আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এই দাবি উত্থাপন ও আন্দোলনের হুমকি দেয় ৬৮টি সংগঠনের ওই মোর্চা। মোর্চার অন্তর্ভুক্ত সংগঠনগুলো নারী, মানবাধিকার ও উন্নয়ন নিয়ে কাজ করে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন নারী নেত্রী রোকেয়া কবীর। তিনি বলেন, মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স ১৬ করা হবে একটা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। বর্তমান প্রেক্ষাপটে নারীর বিয়ের বয়স ১৮ বছর থেকেও বরং বাড়ানো উচিত। শুধু বিয়ের বয়স বাড়ানো হলেই বাংলাদেশে যে হারে জনসংখ্যা বাড়ছে, তা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। ১৮ বছরের আগে কোনো মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া মানে বাল্যবিবাহ প্রবর্তন করা।

জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক শিশু অধিকার সনদ ও বাংলাদেশে প্রচলিত আইনের বরাত দিয়ে রোকেয়া কবীর বলেন, ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত কেউ শিশু বলে স্বীকৃত। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন অনুযায়ী, ১৬ বছরের নিচে কোনো নারীর সম্মতিতে বা অসম্মতিতে যৌনমিলন ধর্ষণের অপরাধ। এখন যদি মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৬ করে আইন করা হয়, তবে তা হবে আইন করে শিশু ধর্ষণ। বাংলাদেশের মতো জনবহুল দেশে বিয়ের বয়স কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হচ্ছে আরও বড় বিপর্যয় ডেকে আনা।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আইন চূড়ান্ত হওয়ার আগেই সরকার বাল্যবিয়ে রোধে একটি জাতীয় কর্মপরিকল্পনা করেছে। সেখানে মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স ১৬ বছর ধরা হয়েছে। এর তীব্র নিন্দা জানানোর পাশাপাশি তা বাতিলের দাবি জানানো হয়।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়শা খানম বলেন, তারা শিগগিরই এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি স্মারকলিপি দেবেন।

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুলতানা কামাল বলেন, মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৮ না রাখলে তাঁরা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী, নারীনেত্রী জাকিয়া কে হাসান, আফরোজা হক প্রমুখ।