মামলা মোকাবিলায় নতুন প্রস্তুতি নাইকোর

ঢাকার আদালতে সরকারের দায়ের করা ক্ষতিপূরণ মামলা নতুনভাবে মোকাবিলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কানাডীয় কোম্পানি নাইকো। এ জন্য কোম্পানিটি আদালতে দুটি আবেদন করে আইনজীবী পরিবর্তন ও আপাতত মামলার কার্যক্রম স্থগিত রাখার অনুরোধ জানিয়েছে।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর করা ওই আবেদনের প্রথমটিতে বলা হয়েছে, তাদের নিয়োজিত আইনজীবী যথাযথভাবে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন। তাই তারা এখন মাহবুবুল ইসলাম মজুমদারসহ কয়েকজন নতুন আইনজীবী নিয়োগ করছে।

দ্বিতীয় আবেদনে আন্তর্জাতিক সালিসি প্রতিষ্ঠান ‘ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর সেটেলমেন্ট অব ইনভেস্টমেন্ট ডিসপিউট (ইকসিড)’ ট্রাইব্যুনালে তাদের দায়ের করা মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ায় ঢাকার আদালতের মামলার কার্যক্রম স্থগিত রাখার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

এই দুই আবেদনের বিষয়ে আদালত আগামী ২৭ নভেম্বর শুনানির দিন ধার্য করেছেন বলে সরকারি সূত্র জানায়।

সুনামগঞ্জের টেংরাটিলা গ্যাসক্ষেত্রে পর পর দুটি বিস্ফোরণের ঘটনায় সরকার ও পেট্রোবাংলা ২০০৮ সালের ১৫ জুন নাইকোর কাছে ৭৪৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করে মামলা করে। ঢাকার যুগ্ম জেলা জজ আদালতে মামলার কার্যক্রম চলছে।

মামলায় নাইকোর ভাইস প্রেসিডেন্ট ব্রায়ান জে. এডলফ, কোম্পানির বাংলাদেশ অংশের তত্কালীন প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ, ভাইস প্রেসিডেন্ট পিটার মারসিয়ার, যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের গ্যাসকূপ খনন কোম্পানি জিএসএমের প্রেসিডেন্ট রবার্ট ডি গ্রেস ও খনন ব্যবস্থাপক জর্জ এম ল্যাটিমোরকে আসামি করা হয়। বারবার সমন জারি করা হলেও তাঁরা আদালতে হাজির হননি।

তবে আদালত ইতিমধ্যে এ মামলায় ১১ জনের সাক্ষ্য নিয়েছেন। তাঁরা হলেন পেট্রোবাংলার সচিব মো. ইমাম হোসেন, উপমহাব্যবস্থাপক মো. মোস্তফা কামাল, জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব এ টি এম মোস্তফা কামাল, বাপেক্সের সাবেক তিন কর্মকর্তা সৈয়দ সামছুল আলম, মো. শাহাবুদ্দীন ও ইউসুফ আলী তালুকদার; পেট্রোবাংলার সাবেক কর্মকর্তা আক্কাস আলী, সিলেট গ্যাসফিল্ডস লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক রহমান মুরশেদ, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. নুরুল ইসলাম, সুনামগঞ্জের সাবেক জেলা প্রশাসক জাফর সিদ্দিক ও দোয়ারাবাজারের সাবেক ইউএনও মো. মুহিবুজ্জামান।

এই মামলা চলাকালে ২০১০ সালে নাইকো আন্তর্জাতিক সালিসি প্রতিষ্ঠান ‘ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর সেটেলমেন্ট অব ইনভেস্টমেন্ট ডিসপিউট (ইকসিড)’ ট্রাইব্যুনালে বাংলাদেশ সরকার, পেট্রোবাংলা ও বাপেক্সের বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা করে। গত আগস্ট মাসে ইকসিডের এক আদেশে ওই মামলা থেকে সরকারকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। অন্যদের বিরুদ্ধে মামলাটি চলমান আছে।