১১ বছর ধরে বিদ্যুৎ বিল দেয় না সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি

প্রায় ১১ বছরে এক টাকাও বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করেনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি। ফলে তাদের বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ২৯ লাখ ৩৮ হাজার ১৪৩ টাকা। বিল না দেওয়ার তালিকায় আছে নগর ভবনও। নগর ভবন অর্থাৎ দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বিল বকেয়া পড়েছে ২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।
বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি) আইনজীবী সমিতি ও নগর ভবনকে সময় বেঁধে দিয়ে বলেছে, বিল পরিশোধ না করলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে, মামলাও করা হবে। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে আজ ১৫ জুন এবং আইনজীবী সমিতিকে ২০ জুনের মধ্যে বিল পরিশোধ করতে বলা হয়েছে।
জানতে চাইলে চিঠি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে ডিপিডিসির সচিব ও বিশেষ টাস্কফোর্সের প্রধান মোহাম্মদ মুনীর চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, আইন সবার জন্য সমান। তাই এই দুটি প্রতিষ্ঠান বিল না দিলে বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে।
ডিপিডিসি সূত্র জানায়, ১০ জুন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিকে চিঠি দিয়ে বলা হয়, নিয়মিত মাসিক বিল পাঠানো হলেও প্রায় ১১ বছরে এক টাকাও পরিশোধ করা হয়নি। সর্বশেষ গত ৩ ফেব্রুয়ারি ডিপিডিসির নির্বাহী পরিচালকের (অপারেশন) দপ্তর থেকে নোটিশ দেওয়া হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।
চিঠিতে বলা হয়, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎসেবা পেয়েও আইনজীবী সমিতির বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করা দুর্ভাগ্যজনক, যা আইন পেশার মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উদ্দিন খোকন গতকাল রোববার প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিটি আইনজীবী সমিতির ভবন সরকার করে দেয়, রক্ষণাবেক্ষণও করে সরকার। আইনজীবীরা বিচারের অংশ। এ জন্য যেখানেই আদালত আছে, সেখানেই বার ভবন আছে। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির বিদ্যুৎ বিল সরকার মানে সুপ্রিম কোর্ট দেবে। আইনজীবী সমিতি কোথা থেকে টাকা দেবে? তিনি বলেন, পাঁচ-ছয় বছর ধরে তাঁদের কাছে বিল আসে। সেগুলো রেজিস্ট্রারের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
যোগাযোগ করা হলে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল সৈয়দ আমিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ভবন ব্যবহার করে তারা (সমিতি), তাহলে বিল সুপ্রিম কোর্ট দেবে কেন? এ বিষয়টি তাদের জানিয়েও দেওয়া হয়েছে। ডিপিডিসিকেও আলাদা মিটার করে বিল করতে বলা হয়েছে।
চিঠি পাওয়া এবং বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকার কথা স্বীকার করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আনসার আলী খান বলেন, এখন কিছু হলেও বিল দিতে হবে।