ফুলজোড় নদে আড়াআড়ি বাঁধ দিয়ে মাছ নিধন

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার ফুলজোড় নদে বাঁশ ও জালের বেড়া দিয়ে মাছ ধরা হচ্ছে। বিশেষ এ ফাঁদে দেশীয় পোনা মাছসহ বিভিন্ন জাতের মাছ ধরা হচ্ছে। এতে মাছের বংশবৃদ্ধি ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় মৎস্যজীবীরা।
উপজেলার ঘুড়কা ইউনিয়নের ঘুড়কা এলাকায় ফুলজোড় নদে আড়াআড়িভাবে ওই বেড়া দেওয়া হয়েছে।
এলাকার লোকজন জানান, প্রতিবছর এ সময়ে ঘুড়কা হালদারপাড়ার দেবেন্দ্রনাথ হালদারের ছেলে রবি হালদারের নেতৃত্বে একটি চক্র বিশেষ ফাঁদ পেতে মাছ নিধন করছে। এ ফাঁদে বোয়াল মাছের পোনা ব্যাপক হারে ধরা পড়ছে। এ ছাড়া বাইম, পাবদা, গোছি, চেলা, আইড়, ভাগনাসহ বিভিন্ন মাছও ধরা পড়ছে।
মৎস্যজীবী আবদুল মান্নান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নদে বাঁশের খুঁটি পুঁতে ও জাল দিয়ে দেশীয় প্রজাতির মাছ নিধন করা হলেও কর্তৃপক্ষ নির্বিকার। ফলে মাছের বংশবৃদ্ধি ঘটছে না।
এ প্রসঙ্গে রবি হালদার বলেন, তিনি একা নন, হালদারপাড়ার সবাই মিলে নদে বাঁশের খুঁটি ও জাল পেতে মাছ ধরছেন। এটা আইনের পরিপন্থী কি না তা তাঁর জানা নেই। তবে বংশানুক্রমে তাঁরা মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন বলে জানান।
সম্প্রতি সরেজমিন দেখা গেছে, প্রায় ২০০ মিটার প্রশস্ত নদীটির ওই অংশে বাঁশের খুঁটি পুঁতে আড়াআড়িভাবে তিনটি বেড়া দেওয়া হয়েছে। দুই পাশের দুটি ৪০ মিটার করে আর মাঝের বড় বেড়াটির দৈর্ঘ্য ১০০ মিটার। একটি থেকে আরেকটির দূরত্ব ১০ মিটার। এই বেড়ার কারণে নৌকা চলাচল একরকম বন্ধ হয়ে গেছে। স্থানীয় লোকজন জানান, এ সময় নদে বড় নৌকা চলাচল করে না। তবে ছোট নৌকাগুলো পূর্ব পাশ দিয়ে কোনোমতে পার হয়।
ঘুড়কা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হারুনার রশিদ বলেন, ফুলজোড় নদের ঘুড়কা এলাকায় বাঁশের বেড়া দিয়ে মাছ ধরা হচ্ছে কি না, তা তাঁর জানা নেই।
রায়গঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা খালেকুজ্জামান সরকার বলেন, ‘বিষয়টি আমরা জেনে তাঁকে মৌখিকভাবে সতর্ক করেছি। ঈদের পর এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফিরোজ শাহ্ বলেন, স্থানীয় মৎস্য কার্যালয়ের মাধ্যমে খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মৎস্য সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, নদ-নদী, খাল-বিলে মাছ চলাচলের পথে আড়াআড়ি বাঁধ বা স্থায়ীভাবে বেড়া দেওয়া মৎস্য আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ। এ ছাড়া প্রতিবছর জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত নয় ইঞ্চির ছোট নলা মাছ (রুই, কাতল, মৃগেল, কালবাউশ ইত্যাদি) এবং ৩০ সেন্টিমিটারের ছোট বোয়াল ও আইড় মাছ ধরা বা বিক্রি করা দণ্ডনীয় অপরাধ। এ বিধি লঙ্ঘন করলে এক থেকে দুই বছর সশ্রম কারাদণ্ড বা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা যেতে পারে।