পাম অয়েল-বাসি তেলের ইফতারি

বাসি তেলের ঘনত্ব হয় বেশি। রংও যায় বদলে। এই তেলে তৈরি হয় হাইড্রো কার্বন, যা মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। রংপুর নগরের অধিকাংশ দোকানে বাসি ও ভেজাল তেলে ইফতারসামগ্রী তৈরি হচ্ছে। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন নগরবাসী।
জেলা সিভিল সার্জন মোজাম্মেল হোসেন বলেন, ভেজাল তেল শরীরে নানা জটিল রোগের সৃষ্টি করে। পচা ও বাসি তেলে তৈরি খাবার খেলে পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি।
নগরের মেডিকেল মোড়, ধাপ, লালকুঠি, রাধাবল্লভ, মেডিকেলের পূর্ব গেট, কাচারি বাজার, সিটি করপোরেশন বাজার, পায়রা চত্বর, বেতপট্টি, জাহাজ কোম্পানি মোড়, শাপলা চত্বর, লালবাগ, কলেজ রোড, পার্কের মোড়, কামাল কাছনা বাজার, মাহিগঞ্জ, সাতমাথা, সেন্ট্রাল রোড, শালবন মোড়সহ আরও কিছু এলাকার ১০০ দোকানে এবার ইফতারসামগ্রী বিক্রি হচ্ছে।
গতকাল বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, নানা পদের ইফতারসামগ্রী তৈরি হচ্ছে সেখানে। এর মধ্যে রয়েছে পেঁয়াজু, আলুর চপ, বেগুনি, জিলাপি, বড়া ও ছোলা। অধিকাংশ দোকানে এসব ইফতার তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছিল পাম অয়েল। এ ছাড়া পুরোনো তেল ছিল প্রায় সবকটি দোকানে।
কয়েকটি দোকানের একাধিক কর্মচারী জানান, পুরোনো তেলেই ইফতারি তৈরি হয় বেশি। আগের দিনের ব্যবহার করা তেল রেখে দেওয়া হয়। পরে সেই তেল পুনরায় ব্যবহার করা হয় ইফতারিতে। এটি অধিকাংশ দোকানেই হয়ে থাকে।
জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক দোকানমালিক বলেন, ‘সয়াবিন তেল দিয়ে রান্নাবান্নার যাবতীয় কাজ করতে গেলে জিনিসের দাম অনেক বেশি পড়ে। সে জন্য পাম অয়েল ব্যবহার করা হয়। আর পাম অয়েল যদি ভেজাল ও নিম্নমানের হয়, সেখানে আমাদেরই বা কী করার আছে।’
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের স্যানিটারি ইন্সপেক্টর মাহবুবার রহমান জানান, এই তেল পুরোপুরি পরিশোধিত নয়। খোলা বাজার থেকে এ তেল কিনে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী তাতে ভেজাল তেল মেশান।
মাহবুবার রহমান বলেন, পাতিলে দীর্ঘক্ষণ ধরে তেল গরম করায় সেই তেল হয়ে ওঠে ভারী। এর ফলে তেলের ঘনত্ব অনেক বেড়ে যায়। সেখানে হাইড্রো কার্বন সৃষ্টি হয়। এটি শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এ ছাড়া নিম্নমানের দানাদারজাতীয় তেলও ক্ষতিকর।
চারটি রোজা চলে গেলেও প্রশাসন এখনো ভেজালবিরোধী অভিযানে নামেনি। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ বি এম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী বলেন, দু-এক দিনের মধ্যে ভেজালবিরোধী অভিযান চালানো হবে।