কালও বৃষ্টির সম্ভাবনা

আজ সারা দিন চলছে থেমে থেমে বৃষ্টি। ফলে কর্মমুখী নগরবাসীকে পড়তে হয়েছে দুর্ভোগে। নগরের প্রায় রাস্তারই একপাশে যানজট। অন্যপাশে ফাকা। তাই যাত্রীদের গাড়ির জন্য লম্বা সময় অপেক্ষা করতে হয়। ছবিটি নগরের সার্ক ফোয়ারার সামনে থেকে তোলা হয়েছে। ছবি: মনিরুল আলম
আজ সারা দিন চলছে থেমে থেমে বৃষ্টি। ফলে কর্মমুখী নগরবাসীকে পড়তে হয়েছে দুর্ভোগে। নগরের প্রায় রাস্তারই একপাশে যানজট। অন্যপাশে ফাকা। তাই যাত্রীদের গাড়ির জন্য লম্বা সময় অপেক্ষা করতে হয়। ছবিটি নগরের সার্ক ফোয়ারার সামনে থেকে তোলা হয়েছে। ছবি: মনিরুল আলম

ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে থেকে কখনো ভারী, কখনো মাঝারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আগামীকাল শুক্রবারও দেশের সব এলাকায় ভারীসহ মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক প্রথম আলোকে জানান, আজ সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ঢাকা বৃষ্টিপাত হয়েছে ৭৯ মিলিমিটার। এর মধ্যে দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ৬৭ মিলিমিটার। তিনি জানিয়েছেন, খুলনা, বরিশাল, রংপুর, সিলেট ও রাজশাহী বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী বর্ষণ অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। চট্টগ্রাম বিভাগের ভারী বর্ষণের কারণে পাহাড় ধসের সম্ভাবনা রয়েছে।
আবুল কালাম মল্লিক বলেন, বর্ষা মৌসুম হওয়ায় এখন দেশের সবখানেই থেমে থেমে বৃষ্টি হবে। আগামীকাল শুক্রবারও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির তীব্রতা আরও দুই একদিন থাকবে। তবে ২৭ তারিখের পর থেকে এর মাত্রা কিছুটা কমবে।
আবহাওয়া অফিস থেকে জানানো হয়, আজ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কক্সবাজারে ১৫৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। গতকাল এ জেলায় বৃষ্টিপাত হয়েছে ৪৭৭ মিলিমিটার। চট্টগ্রামে বৃষ্টি হয়েছে ৪০ মিলিমিটার। ভোলা হয়েছে ১১২ মিলিমিটার ও বরিশালে হয়েছে ১০২ মিলিমিটার।
আজকের ভারী বৃষ্টিতে ভোগান্তিতে পড়তে হয় রাজধানীবাসীর। কখনো ভারী, মাঝারি, ঝিরিঝিরি বৃষ্টির কারণে মানুষ পড়ে চরম ভোগান্তিতে। রাজধানীর অলিগলি পথগুলোয় বৃষ্টির পানি জমে যাওয়া মানুষের স্বাভাবিক চলাচল বিঘ্নিত হয়। বৃষ্টির কারণে রাজধানীতে গণপরিবহনের সংকট সৃষ্টি হয়। এতে ফার্মগেট, শাহবাগ, বাংলামোটরে অসংখ্য মানুষকে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিল।
রাজধানীর হাতিরঝিল মোড়, মহাখালী, ফার্মগেট, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ওই সব এলাকাতে বৃষ্টির পানি জমে গেছে। এ ছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ি ফলে মানুষের দুর্ভোগের মাত্রা আরও বেড়েছে।
আমাদের বরিশাল প্রতিনিধি সাইফুর রহমান জানানা, আষাঢ় মাসের মৌসুমি বৃষ্টিতে বরিশাল নগরের দুই তৃতীয়াংশ ডুবে গেছে। বৃষ্টির পানিতে বন্দী হয়ে পড়েছে নগরবাসী। অধিকাংশ এলাকার বাড়ির নিচতলা পানিতে ডুবে গেছে। মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। নগরবাসীর অভিযোগ অপর্যাপ্ত নালা ব্যবস্থায় জলাবদ্ধতা তীব্র আকার ধারণ করছে।
বরিশাল আবহাওয়া কার্যালয়ের পর্যবেক্ষক শওকত দেওয়ান গাজী প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় ২১৮ মি. মি. বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। গত রাত ১২ থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এর পরিমাণ ছিল ১৯৮ মি. মি.। রাত তিনটা থেকে অঝোর ধারায় বৃষ্টি শুরু হয়। বর্ষা মৌসুমেই নয় গত ২০ বছরেও এত বৃষ্টিপাত হয়নি।’
সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরের সদর রোড, কালিবাড়ি রোড, বিএম স্কুল রোড, বগুড়া রোড, মুন্সি গ্যারেজ, বাংলাদেশ ব্যাংক, দ্বীনবন্ধু সেন সড়ক, সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, অক্সফোর্ড মিশন স্কুল, পলিটেকনিক সড়ক, গোস্থান রোড, বট তালা, নবগ্রাম রোড, ব্রজমোহন কলেজ, হাতেম আলী কলেজ, ককালুশাহ সড়ক, ফজলুল হক অ্যাভিনিউ, আমানতগঞ্জ, পলাশপুর, কাউনিয়াসহ নগরের অধিকাংশ এলাকায় হাঁটু থেকে কোমর পর্যন্ত পানি জমে গেছে। অনেক স্থানে সড়কের অস্তিত্ব বোঝা যাচ্ছে না। বইছে নদীর মতো স্রোত। বাড়ির নিচতলা ডুবে যাওয়ায় অনেকে খাটে কিংবা অন্যত্র আসবাবপত্র সরিয়ে নিয়েছেন।
এ ছাড়া দেশের অন্য অঞ্চলগুলোতে অতি বৃষ্টিতে ভোগান্তিতে পড়েছে মানুষ।