সাতক্ষীরায় গৃহবধূকে নির্যাতনের অভিযোগ

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গৃহবধূ আছুরা খাতুন l প্রথম আলো
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গৃহবধূ আছুরা খাতুন l প্রথম আলো

জমি নিয়ে বিরোধের জেরে সাতক্ষীরা শহরে এক গৃহবধূকে প্রতিপক্ষের লোকজন নির্যাতন করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত শুক্রবার পলাশপোলের চেয়ারম্যান পাড়ায় ওই ঘটনা ঘটে।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের ৩ নম্বর সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন গৃহবধূ আছুরা খাতুন (৪৮) জানান, ১০ মে তাঁর স্বামী ইমান আলী মারা যান। তিনি ছিলেন দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী। স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে তাঁর প্রথম পক্ষের স্ত্রীর ছেলেরা ও তাঁদের স্ত্রীরা তাঁকে সন্তানসহ জমি ও বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। উচ্ছেদ হওয়ার ভয়ে ১৫ জুন তিনি প্রথম পক্ষের ছেলে আবু বক্কর ছিদ্দিক, আবুল হোসেন, হিদোল ইসলামসহ তাঁদের স্ত্রী ও সন্তানদের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। আদালত সদর উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তাকে ঘটনা তদন্ত করে আগামী ২৩ জুলাইয়ের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
তিনি অভিযোগ করেন, আদালতের নির্দেশ পেয়ে ওসি এমদাদুল হক শেখ থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মাহাবুবুর রহমানকে ঘটনাস্থলে পাঠান। কিন্তু এরপর প্রতিপক্ষের লোকজন তাঁর বসতঘরের পাশের জমি দখল করে পাকা ঘর নির্মাণ শুরু করেন এবং তাঁর গোয়ালঘরের চাল ভেঙে দেন।
শুক্রবার বিকেলে ভেঙে দেওয়া গোয়ালঘরে কাজ করছিলেন তিনি। এ সময় হিদোল, আবু বক্করসহ তাঁদের স্ত্রী ও ছেলেরা তাঁকে টেনেহিঁচড়ে ঘরের বাইরে বের করেন। এরপর তাঁকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে জখম করা হয়। রড দিয়ে তাঁর ডান কাঁধে আঘাত করা হয়। খবর পেয়ে তাঁর ছেলে ইয়াছিনসহ স্থানীয় কয়েকজন তাঁকে উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করান।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক বিশ্বজিৎ মণ্ডল জানান, আঘাতের কারণে আছুরা খাতুনের ডান কাঁধের সন্ধিস্থল ভেঙে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ছাড়া তাঁর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন আছে।
ইমান আলীর ছেলে হিদোল ইসলাম বলেন, তাঁর বাবা মারা যাওয়ার আগে বাড়িসহ জমি তাঁদের নামে লিখে দিয়ে গেছেন। তাই ২২ বছর সংসার করলেও আছুরা খাতুনের সেখানে থাকার কোনো অধিকার নেই।
নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, গোয়ালঘর মেরামতের চেষ্টা করায় কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে আছুরার সঙ্গে তাঁদের ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। তাতে সামান্য আহত হয়েছেন আছুরা।