লাকসামে দুই পক্ষের সংঘর্ষে দুজন নিহত

জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে কুমিল্লার লাকসাম উপজেলায় গত শনিবার রাতে দুই পক্ষের সংঘর্ষে টেঁটাবিদ্ধ হয়ে দুজন নিহত ও অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মুদাফফরগঞ্জ ইউনিয়নের শ্রীয়াং গ্রামের সাইফুল মিয়া ও সেলিম মিয়ার সঙ্গে তিন একর জায়গা নিয়ে ৩০ বছর ধরে বিরোধ চলছে। গত শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে দুই পক্ষের অনুসারীদের মধ্যে প্রথমে কথা-কাটাকাটি হয়। পরে দুই পক্ষের লোকজন টেঁটা, তির-ধনুক, লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত দুই ঘণ্টাব্যাপী দফায় দফায় ওই সংঘর্ষ হয়। এ সময় সাইফুলের পক্ষের আবদুর রহিম (৩০), আনোয়ার হোসেন (৩৬), শাহজাহান (৪৫), তানিয়া আক্তার (১৩), মনির হোসেন (২০), নজির আহম্মদ (২৮) ও আমেনা বেগম (৩০) এবং সেলিম মিয়ার পক্ষের সুলতান (২৮), আবদুল মান্নান (৬৫), পেয়ারা বেগম (৬০), মোমেনা বেগম (৩৭), মহরম আলী (৪২), কমলা বিবি (৬০), আনজুমানারা (৪৫), কুলসুম (২৫), ইদু আলী (৩০), সাজেদা আক্তার (৩৫), সাহেদা আক্তার (২৬), সোহাগ মিয়া (১২) ও জয়নাল আবেদীনসহ (১২) অন্তত ২৫ জন আহত হন। আহত ব্যক্তিদের কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এর মধ্যে আবদুর রহিমের বুকে ও সুলতান পেটে টেঁটাবিদ্ধ হয়। রাতেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আবদুর রহিম মারা যান। এ ছাড়া গতকাল রোববার সকালে ঢাকায় নেওয়ার পথে সুলতান মারা যান। গতকাল বিকেলে প্রশাসনের উপস্থিতিতে তাঁদের দুজনের পৃথক জানাজা হয়। পরে তাঁদের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এদিকে সংঘর্ষের খবর পেয়ে রাতেই অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে যান। এ ঘটনার পর থেকে ওই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আলী আশরাফ ভূঞা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এ ঘটনার জন্য সাইফুল প্রতিপক্ষ সেলিমকে দায়ী করেছেন। তবে সেলিম মিয়া বলেন, ‘সাইফুলের লোকজন আমার লোকদের ওপর প্রথমে হামলা চালায়।’
এ ব্যাপারে লাকসাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, জমিজমা নিয়ে বিরোধের জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে।