মুক্তিযোদ্ধা আত্মহত্যার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি স্বজনদের

বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রামের সাতকানিয়া ইউনিটের সাবেক কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা আইয়ুব খান আত্মহত্যার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তাঁর স্বজনেরা। আজ বুধবার চট্টগ্রামের সাতকানিয়া থেকে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে এ দাবির কথা জানান আইয়ুব খানের মামাতো ভাই আমীর হোসেন।

গতকাল মঙ্গলবার এই আত্মহত্যা নিয়ে রাজধানীর শাহবাগ থানায় আমীর হোসেন একটি অপমৃত্যু মামলাও দায়ের করেছেন।

আমীর হোসেন বলেন, আইয়ুব খান যে হোটেলে আত্মহত্যা করেছেন, সেখানে পাওয়া একটি চিরকুটের অনুলিপি শাহবাগ থানা-পুলিশের কাছে আছে। তিনি কেন এই আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন সে সম্পর্কে ওই চিরকুটে বিস্তারিত লেখা আছে। চিরকুটে প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি আবেদনও ছিল। কিন্তু ওই চিরকুটের কোনো অনুলিপি পুলিশ তাঁদের দেয়নি। তিনি দাবি করেন, ওই চিরকুট ধরে বিচার বিভাগীয় তদন্ত করলে আত্মহত্যার প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

আমীর হোসেন আরো বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্তের পর মরদেহ চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। আজ সকালে সেখানে তাঁর দাফন সম্পন্ন হয়েছে। আইয়ুব খান আর্থিকভাবে অসচ্ছল ছিলেন। তাঁর দুই ছেলে দুই মেয়ে। বড় ছেলে আরিফ হোসেন (১৮) চট্টগ্রামে একটি দোকানে কাজ করেন বলেও তিনি জানান।

এ ব্যাপারে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক বলেন, অপমৃত্যু মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।

গতকাল রাজধানীর তোপখানা রোডে একটি আবাসিক হোটেলের কক্ষ থেকে আইয়ুব খানকে অচেতন অবস্থায় পুলিশ উদ্ধার করে। হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি মারা যান। পুলিশ বলছে, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। তিনি একটি সুইসাইড নোট (চিরকুট) রেখে গেছেন। এতে মন্ত্রণালয়ের একজন সচিবকে অভিযুক্ত করে লেখা রয়েছে, ‘গলাধাক্কা দিয়ে অপমান করে বের করে দেওয়ায় আমি আত্মহত্যা করলাম’।

চিরকুটে আরও লেখা রয়েছে, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ইউনিট ঘোষণার জন্য মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এম এ হান্নানকে টাকা দিয়েছিলাম। টাকা দিয়ে বারবার আবেদন করার পরও তিনি দক্ষিণ জেলা ইউনিট ঘোষণা করেননি। তাঁর বাসায় গিয়ে টাকা ফেরত চাইলে তিনি গলাধাক্কা দিয়ে অপমান করে বের করে দেওয়ায় আমি আত্মহত্যা করলাম। আমার লাশটা যেন ঢাকায় দাফন করা হয়।

শাহবাগ থানা পুলিশ জানায়, আইয়ুব খান তোপখানা রোডে হোটেল কর্ণফুলীর ২০৪ নম্বর কক্ষে উঠেছিলেন ১৫ দিন আগে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে হঠাৎ ভেতর থেকে কীটনাশকের গন্ধ বের হলে হোটেল কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হয়। তারা গিয়ে দেখে, ভেতর থেকে দরজা বন্ধ। খবর দেওয়া হলে পুলিশ এসে দরজা ভেঙে তাঁকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।