সড়কে বড় বড় গর্ত ও কাদা-পানি, দুর্ভোগ

সড়কে বড় বড় গর্ত। সেই গর্তে জমে আছে ময়লা দুর্গন্ধযুক্ত কাদা আর পানি। এরই মধ্য দিয়ে ট্রাক, ট্রাক্টর আর রিকশাভ্যান গর্তে পড়ে হেলেদুলে কোনো রকমে চলছে। দিনাজপুরের পুলহাট বিসিক শিল্পনগরের সড়কগুলোর চিত্রটি এমনই।
গত বুধবার সরেজমিনে দিনাজপুরের পুলহাট শিল্প ও বাণিজ্য এলাকা বিসিক শিল্পনগর ঘুরে দেখা যায়, শিল্পনগর ও একে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে অটো রাইস মিল, ওভেন ব্যাগের কারখানা, ময়দা, সেমাই, ডালের মিল ছাড়াও মিলের যন্ত্রপাতি মেরামত ও তৈরির কারখানা। সেখানকার সড়ক দিয়ে ধান-চাল, গম, সেমাইসহ শিল্পনগরে বিভিন্ন পণ্য আনা-নেওয়া করে বিভিন্ন পরিবহন। কিন্তু বিসিক ও এর সংলগ্ন এলাকার বেশির ভাগ সড়কেরই বেহাল দশা। বিসিক কার্যালয়ের পাস দিয়ে যাওয়া সড়কের সামনেও নোংরা পানি জমে থাকতে দেখা গেছে। বাকি সড়কেও বড় বড় গর্ত, পানি ও কাদা জমে থাকার দৃশ্য চোখে পড়েছে।
এসব সড়ক দিয়ে পণ্যবাহী যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। গত বুধবার দুপুরে বিসিক শিল্প এলাকার সড়কে চালবোঝাই একটি ট্রাকের চালক আবদুর রহমান বলেন, বিসিকের ভেতরে পণ্য বোঝাই বা খালাস করতে এসে প্রায়ই ট্রাক ও ট্রাক্টরের চাকা ফেঁসে যায়। কখনো চাকা দেবে যায়, স্প্রিং বা চেচিস ভেঙে যায়।
বিসিক এলাকার মৎসখামারসংলগ্ন রাস্তার পাশে সারি বেঁধে প্রায় ৩০টি রিকশাভ্যানকে অপেক্ষা করতে দেখা যায়। ভ্যানচালক আরমান আলী বলেন, ‘২০০-৩০০ ভ্যান আছে যেগুলো বিসিকের মিল-কারখানার মাল টানে। কিন্তুক কুনো রাস্তাই চলাচল করার মতন নাই। ধান-চাল নিয়া চলাচল করবার যাই রাস্তার খালত পড়ি প্রত্যেক দিন একটা-দুইটা করি ভ্যানগাড়ি ভাঙি পড়ে। একটা ভ্যানের সঙ্গে আরও দুটা করি মানুষ লাগে ঠেলবার তনে’।
পুলহাট বিসিক শিল্প এলাকার মিতালী অটো রাইস মিলের মালিক আইনুল হক বলেন, এই এলাকার সড়কগুলো ১০ বছরেও সংস্কার হয়নি। বৃষ্টি হলেই পানি জমে যায়।
বিসিক শিল্প এলাকার কাঞ্চন অটো রাইস মিলের অন্যতম কর্ণধার মোসাদ্দেক হোসেন চৌধুরী বলেন, বিসিক এলাকায় ৩০ বছর আগে যে ড্রেন নির্মাণ করা হয়েছিল তার পরে আর সংস্কার করা হয়নি। এতে ড্রেনগুলো বন্ধ হয়ে গেছে।
বিসিকের শিল্পনগর কর্মকর্তা মোসাম্মৎ নিলুফার ইয়াসমিন বলেন, ‘বিসিকের নিজস্ব এলাকার রাস্তা আছে প্রায় তিন কিলোমিটার। কিন্তু বিসিককে কেন্দ্র করে আশপাশের বিশাল এলাকাজুড়ে যে শিল্প-কারখানা গড়ে উঠেছে, সেসবের পণ্য পরিবহনের পুরো চাপই পড়ে বিসিকের রাস্তার ওপরে।’
দিনাজপুর বিসিকের উপমহাব্যবস্থাপক হাসনাত হোসেন বলেন, ‘১৯৯৮ সালে বন্যা পুনর্বাসনের বরাদ্দ দিয়ে ২০০০ সালে সড়কগুলো সংস্কারের পর আর কাজ করা হয়নি। ২০১০ সালে সড়ক মেরামতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছিল। তবে কোনো বরাদ্দ আসেনি। সম্প্রতি বিসিক রাজশাহী আঞ্চলিক কার্যালয়ে পরিচালকের কাছে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছে। বরাদ্দ এলে সড়ক ও ড্রেনের সংস্কারকাজ করা হবে।