আইএসের গুলিতে দুই বাংলাদেশি লিবিয়ায় নিহত?

লিবিয়ায় গুলিতে মোসলেহ উদ্দিন ও আরিফুল করিম সিদ্দিক নামের দুই বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তাঁদের স্বজনেরা। স্বজনদের দাবি, মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সদস্যদের গুলিতে ওই দুজন নিহত হন। তবে ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কোনো সূত্র থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
মোসলেহ উদ্দিন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর দাঁতমণ্ডল গ্রামে তাঁর মামা ওয়াহেদ উল্লাহর বাড়িতে থাকতেন। তিনি হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার চিকনপুর গ্রামের আবদুল বাছিরের ছেলে। আর আরিফুলের বাড়ি বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার লোহালিয়া-ভূতেরদিয়া গ্রামে।
মোসলেহ উদ্দিনের বড় ভাই মো. মোতালিব জানান, গত বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার চুন্টা গ্রামের লিবিয়াপ্রবাসী মো. রফিকের মাধ্যমে মোসলেহ উদ্দিনের মৃত্যুর খবর পান তাঁরা। রফিক তাঁদের জানিয়েছেন, গত মঙ্গলবার দুপুরে মোসলেহ উদ্দিন, বরিশালের আরিফুলসহ চারজন লিবিয়ার আজদাবিয়া এলাকায় ঘুরতে গিয়ে আইএস জঙ্গিদের কবলে পড়েন। একপর্যায়ে আইএস জঙ্গিদের কবল থেকে পালানোর চেষ্টা করলে গুলিতে নিহত হন মোসলেহ উদ্দিন ও আরিফুল। অন্য দুজন প্রাণে বেঁচে যান।
মোতালিব জানান, পরিবারে সচ্ছলতা আনতে দরিদ্র পরিবারের সন্তান মোসলেহ উদ্দিন ২০০৮ সালে সুদানে পাড়ি জমান। সেখান থেকে ২০১২ সালে কয়েকজন বাংলাদেশি বন্ধুর সঙ্গে লিবিয়ায় চলে যান। সেখানে তিনি ভাড়া করে গাড়ি চালাতেন। তিন বছর ধরে লিবিয়ার আল কুফরা সিটিতে তিনি বসবাস করতেন। মোতালিব তাঁর ভাইয়ের মরদেহ সরকারি ব্যবস্থাপনায় দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের প্রতি দাবি জানান।
ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন মোসলেহ উদ্দিনের মা শামসুন্নাহার। মাঝে মাঝে বিলাপ করছিলেন, ‘আমরার সব আশা শেষ অইয়া গেছে। অহন আমি ছেলের মুখটা দেখতে চাই।’ নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল কাদের জানান, বিষয়টি তিনি শুনেছেন।
বাবুগঞ্জের আরিফুল করিমের ভাই আনিসুর রহমান গতকাল প্রথম আলোকে জানান, গত বুধবার তাঁর বাবার কাছে লিবিয়া থেকে ফোন আসে। আরিফুলের সঙ্গে একই কক্ষে থাকেন বলে পরিচয় দিয়ে ফোনে জানানো হয়, আরিফুল গত মঙ্গলবার গুলিতে নিহত হয়েছেন। তবে সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁরা কারও কাছ থেকে খবর পাননি বলে জানান আনিসুর। বাবুগঞ্জ থানার ওসি শাহ আলম জানান, তিনি বিষয়টি শুনেছেন।