পাচারকারীদের কবল থেকে ছয় শিশু উদ্ধার

মাদ্রাসায় পড়ানোর কথা বলে ছয় শিশুকে তাদের পরিবার থেকে নিয়ে আসে একটি চক্র। পরে তাদের দিয়ে ভিক্ষা করানো হতো। এ রকম চক্রের এক সদস্যসহ ছয় শিশুকে হবিগঞ্জ থেকে গতকাল মঙ্গলবার উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাদের সবার বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলায়।
উদ্ধার হওয়া শিশুরা হলো কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার সেকেন্দারনগর গ্রামের মালিপাড়া এলাকার কালা মিয়ার ছেলে সোহাদ (১০), একই গ্রামের গিরিপাড়া এলাকার আলো মিয়ার ছেলে জুয়েল (১১), ভোরগাঁও এলাকার কাঞ্চন মিয়ার ছেলে জুনায়েদ (১৬), কুড়েরপাড় এলাকার আবদুল লতিফের ছেলে নাঈম (৯), সেকেন্দারনগর এলাকার রবিউল ইসলামের ছেলে রেজাউল (১২) ও বজেন্দ্রপুর গ্রামের তাহের মিয়ার ছেলে বরুজ মিয়া (১৩)।
হবিগঞ্জ পুলিশ সুপারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সেকেন্দারনগর গ্রামের সাহেববাড়ী এলাকার শহীদ মিয়া ও এমরান ওই ছয় শিশুকে মাদ্রাসায় পড়ানোর কথা বলে প্রায় এক বছর আগে হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে নিয়ে আসেন। পরে তাদের শায়েস্তাগঞ্জ নতুন ব্রিজ এলাকায় এস আর আবাসিক হোটেলে রেখে জোর করে ভিক্ষাবৃত্তিতে জড়ানো হয়। গত সোমবার সকালে বাহুবল উপজেলার কালুটোলা গ্রামের একটি মক্তবের কাছে ভিক্ষা করতে যায় সোহাদ, জুয়েল ও জুনায়েদ। স্থানীয় মাওলানা ফারুকের সন্দেহ হলে তিনি তাদের আটক করে পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাদের উদ্ধার এবং তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী রাতে শায়েস্তাগঞ্জ এস আর হোটেল থেকে আরও তিন শিশুকে উদ্ধার করে। এ সময় ঘটনার সঙ্গে জড়িত এ চক্রের সদস্য হোটেল ব্যবস্থাপক রাসেলকে আটক করা হয়। উদ্ধার হওয়া শিশু সোহাদ, জুয়েল ও জুনায়েদ জানায়, প্রতিদিন ফজরের নামাজের পর শহীদ মিয়া ও এমরান একটি গাড়িতে করে তাদের হবিগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা রেখে আসতেন। আবার সন্ধ্যার আগে নিয়ে আসতেন। প্রতিদিন একেকজন ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা এনে দিত।
হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার জয়দেব কুমার ভদ্র জানান, রাসেল মিয়ার বাড়ি হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার ফুলতলী গ্রামে। এ ঘটনায় বাহুবল মডেল থানার উপপরিদর্শক আবদুল্লাহ আল-মামুন বাদী হয়ে চারজনকে আসামি করেছেন। শিশুদের আদালতের মাধ্যমে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।