টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, একজনের মৃত্যু

চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর ও কক্সবাজারকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলবর্তী এলাকা থেকে বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার কথা জানিয়ে মাইকিং করা হচ্ছে। তার পরও বেশির ভাগ মানুষ বাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছেন না। ছবিটি চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের বেড়িবাঁধ থেকে তোলা। ছবি: সৌরভ দাশ, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর ও কক্সবাজারকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলবর্তী এলাকা থেকে বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার কথা জানিয়ে মাইকিং করা হচ্ছে। তার পরও বেশির ভাগ মানুষ বাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছেন না। ছবিটি চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের বেড়িবাঁধ থেকে তোলা। ছবি: সৌরভ দাশ, চট্টগ্রাম

ঘূর্ণিঝড় কোমেনের অগ্রভাগ গতকাল বুধবার মধ্যরাতের দিকে সেন্টমার্টিন ও টেকনাফ উপকূলে আঘাত হেনে উত্তর পূর্বদিকে এগিয়ে আসছে। এতে টেকনাফ সদর উপজেলার প্রায় ২০টি গ্রাম ও সেন্টমার্টিন দ্বীপের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ঝড়ে সেন্টমার্টিনে শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার ভোরে সেন্টমার্টিনে গাছের নিচে চাপা পড়ে এক ব্যক্তি মারা গেছে। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৫ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, ঘূর্ণিঝড়টি আজ সকাল ছয়টার দিকে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিম, কক্সবাজার থেকে ৮০ কিলোমিটার উত্তর পশ্চিম, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ২০০ কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণ পূর্ব ও পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ পূর্বে অবস্থান করছে। আজ দুপুরের দিকে এটি চট্টগ্রাম উপকূল পার হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার। এটি দমকা বা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে।
আমাদের টেকনাফ প্রতিনিধি জানান, টেকনাফ পৌরসভার জালিয়াপাড়া, চৌধুরীপাড়া, নাই টংপাড়া, দক্ষিণ জালিয়াপাড়া, ইসলামাবাদ, ফলিয়াবাদসহ ২০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। টেকনাফ উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহমেদ বলেছেন, মানুষজনকে গতকাল রাত থেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। পানি স্বাভাবিকের চেয়ে তিন ফুট পর্যন্ত বেড়েছে।
টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান খন্দকার বলেন, ঝোড়ো বাতাসে সেন্টমার্টিন দ্বীপে শতাধিক ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে ও নারকেল গাছ ভেঙে পড়েছে। সেন্টমার্টিনে ভোরে গাছের নিচে চাপা পড়ে মো. ইসলাম (৫০) নামের এক ব্যক্তি মারা গেছেন। সেন্টমার্টিনে কেউ আহত হয়েছেন কি না, জানা যায়নি।

চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর ও কক্সবাজারকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলবর্তী এলাকা থেকে বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার কথা জানিয়ে মাইকিং করা হচ্ছে। তার পরও বেশির ভাগ মানুষ বাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছেন না। ছবিটি চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের বেড়িবাঁধ থেকে তোলা। ছবি: সৌরভ দাশ, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর ও কক্সবাজারকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলবর্তী এলাকা থেকে বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার কথা জানিয়ে মাইকিং করা হচ্ছে। তার পরও বেশির ভাগ মানুষ বাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছেন না। ছবিটি চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের বেড়িবাঁধ থেকে তোলা। ছবি: সৌরভ দাশ, চট্টগ্রাম

উপকূলের বেশির ভাগ এলাকায় ঝোড়ো বাতাস বয়ে যাচ্ছে। একই সঙ্গে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি চলছে। জোয়ারের পানি বেড়েছে।

আমাদের মহেশখালী প্রতিনিধি জানান, সকাল থেকে উপজেলার উপকূলীয় দ্বীপ দর ঘাট, মাতার বাড়ি, সোনাদিয়ার লোকজন নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাচ্ছে। দর ঘাটের অনেকে পাহাড়ি এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে। কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনোয়ারুল নাসের বলেন, ১২৮টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

গতকাল রাত ১১টা পর্যন্ত কক্সবাজার সদর, কুতুবদিয়া, মহেশখালী, উখিয়া, টেকনাফ, চকরিয়া, পেকুয়াসহ উপকূলীয় বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ৫-৬ হাজার লোককে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় ও গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, ভোলা, বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩ থেকে ৪ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
নিম্নচাপটি উপকূল অতিক্রমের সময় ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে বলে জানান আবহাওয়াবিদেরা। এর প্রভাবে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধসের আশঙ্কাও রয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলার এবং সমুদ্রগামী জাহাজগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর ও কক্সবাজারকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলবর্তী এলাকা থেকে বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার কথা জানিয়ে মাইকিং করা হচ্ছে। তার পরও বেশির ভাগ মানুষ বাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছেন না। ছবিটি চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের বেড়িবাঁধ থেকে তোলা। ছবি: সৌরভ দাশ, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর ও কক্সবাজারকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলবর্তী এলাকা থেকে বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার কথা জানিয়ে মাইকিং করা হচ্ছে। তার পরও বেশির ভাগ মানুষ বাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছেন না। ছবিটি চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের বেড়িবাঁধ থেকে তোলা। ছবি: সৌরভ দাশ, চট্টগ্রাম