বঙ্গবন্ধু হত্যা দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে কলঙ্কজনক অধ্যায়

অধ্যাপক আনিসুজ্জামান
অধ্যাপক আনিসুজ্জামান

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে কলঙ্কজনক অধ্যায় বলে মন্তব্য করেছেন ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে হত্যা করতেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন হলেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নপূরণ হবে।
গতকাল শনিবার বাংলা একাডেমিতে আয়োজিত একক বক্তৃতা অনুষ্ঠানে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান এসব কথা বলেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪০তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এই একক বক্তৃতা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের মানুষকে স্বাধীনতার জন্য প্রস্তুত করেছিলেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতেই তিনি স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। যারা এ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে তারা উদ্দেশ্যমূলকভাবেই করে। অনেকেই বলার চেষ্টা করে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান রক্ষা করার চেষ্টা করেছিলেন। এদের সঙ্গে তর্ক করে লাভ নেই। উদ্দেশ্যমূলকভাবেই তারা এগুলো করে।’
অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে বঙ্গবন্ধুর নামে। মুক্তিযোদ্ধারা বঙ্গবন্ধুর নামে স্লোগান দিতেন। বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ মুক্তিযুদ্ধের সময় বারবার বলেছেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধুর মুক্তি দুটোই লক্ষ্য। এমনকি খন্দকার মোশতাক যে ষড়যন্ত্র করেছিলেন তিনিও বলেছিলেন বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করাই লক্ষ্য।’
অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, ‘বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু ফিরে এলে আমরা একটি গণতান্ত্রিক সংবিধান পাই। দেশের দায়িত্ব নিয়ে শিক্ষা, শিল্পসহ বিভিন্ন ক্ষেত্র এগিয়ে নিতে একের পর এক উদ্যোগ নেন বঙ্গবন্ধু। তবে ১৯৭৫ সালে ষড়যন্ত্রকারীরা তাঁকে সপরিবারে হত্যা করে। এর মাধ্যমে আসলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়।’
আনিসুজ্জামান বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় যে বাংলাদেশের স্বপ্ন আমরা দেখেছিলাম সেই বাংলাদেশ এখনো নেই। সেটা করতে পারলেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নপূরণ হবে।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ছিল অসাধারণ সম্মোহনী শক্তি। তিনি তাঁর আচরণ, বক্তৃতা দিয়ে মানুষকে কাছে টানতেন। তিনি ছিলেন রাজনীতির কবি।’