'ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে আইনের শাসন'

রাজনৈতিক আশ্রয় থাকলে কোনো আইনই অপরাধীকে স্পর্শ করতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান। আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সম্মিলিত নাগরিক সমাজ আয়োজিত ‘পৈশাচিকতা বন্ধে নাগরিক দায়িত্ব’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি বক্তব্য রাখেন।

মিজানুর রহমান বলেন, ‘মানুষের সহিষ্ণুতা লোপ পাচ্ছে। আদালতে এক বিচারক আরেক বিচারকের ওপর চড়াও হচ্ছেন। মেধার চেয়ে আনুগত্য প্রাধান্য পাচ্ছে। এতে আইনের শাসন ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে। এসব কারণে মানুষ সহিংস আচরণ করছে। যত বড় অপরাধী-ই হোক, তাঁর যদি রাজনৈতিক আশ্রয় থাকে, আইন তাঁকে স্পর্শ করতে পারে না।’ তিনি বলেন, ‘হত্যাকারীদের আইনের আওতায় আনতে হবে; নইলে হত্যাকারীরা আরও উৎসাহিত হবে।’

নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আবদুর রশিদ বলেন, ‘বাংলাদেশে যেখানে শিশু মৃত্যুর হার কমছে, সেখানে শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে। শিশু মৃত্যুর হার কমার যে অর্জন, এসব হত্যার ঘটনা সেই অর্জনে কালিমা লেপন করে দিচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নাগরিক সমাজ দেশের গণতন্ত্র উদ্ধার করতে ব্যস্ত। কিন্তু সামাজিক ও মানবিক যে বিপর্যয় এবং মূল্যবোধের অবক্ষয় ঘটছে, সে দিকে তাঁদের লক্ষ্য নেই। গণতন্ত্র উদ্ধারের আন্দোলন না করে সামাজিক আন্দোলন করতে হবে। শিশু হত্যার ঘটনায় সরকারও দায়ী। কারণ, এসব হত্যাকাণ্ডের বিচার সরকার করছে না।’

ব্যাংকার খন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, ‘এসব হত্যাকাণ্ড রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ব্যর্থতার কারণে হচ্ছে। সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিভেদ এর জন্য দায়ী। হত্যাকাণ্ড ঘটে যাচ্ছে, বিচার হচ্ছে না—এটাও একটা কারণ।’

জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি শফিকুর রহমান বলেন, ‘মূল্যবোধের অবক্ষয় ঘটে গেছে। জনপ্রতিনিধিদের একটি বড় অংশ জামায়াতের পক্ষে কাজ করে। গত কয়েক বছরে যতগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হয়েছে তার মধ্যে স্কুল মাত্র ৭০০, আর মাদ্রাসা চার হাজার। এর মাধ্যমেই পরাজিত শক্তিরা শক্তিশালী হচ্ছে।’

আজকের গোলটেবিলে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন সম্মিলিত নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক অর্থনীতিবিদ কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ।