লেখাপড়ায়ও সফল কুলসুম

বাবা ও মায়ের সঙ্গে কুলসুম আখতার
বাবা ও মায়ের সঙ্গে কুলসুম আখতার

২০০৯ সালে সপ্তম শ্রেণিতে ওঠার পর অভাবের কারণে লেখাপড়া বন্ধ হয়ে গেলে ঝিয়ের কাজ শুরু করেন কুলসুম আখতার। পরে শিক্ষকের পরামর্শে একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার অধীনে বিষমুক্ত সবজি চাষ ও কেঁচো সার তৈরির কৌশল শিখে নেন তিনি। বাড়িতে কেঁচো সার তৈরি করে চলতে থাকে জীবনসংগ্রাম। থেমে থাকেনি পড়াশোনাও।

.
.

সেই কুলসুম জীবনসংগ্রাম ও পড়াশোনা—দুটোতেই সফল হয়েছেন। এবার তিনি এইচএসসি পরীক্ষায় চতরা বিজ্ঞান ও কারিগরি কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছেন। এসএসসিতেও তিনি চতরা উচ্চবিদ্যালয় থেকে মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ-৪ পেয়েছিলেন। আত্মপ্রত্যয়ী সংগ্রামী এই কুলসুম আখতারকে নিয়ে ২০১৩ সালের ২ মার্চ প্রথম আলোতে ‘কুলসুমের কেঁচোর সংসার’ শিরোনামে শনিবারের একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
কুলসুম রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার চতরা ইউনিয়নের সখীপুর গ্রামের রবি আলমের মেয়ে। মঙ্গলবার সকালে কুলসুমদের বাড়িতে যাওয়ার পথে কথা হয় ওই গ্রামের ইদ্রিস আলীর সঙ্গে। কুলসুমের নাম বলতেই তিনি বলেন, ‘ও, কুলসুম! ওকে চিনব না কেন। তাকে সবাই চেনে। তার কারণেই গ্রামের অনেক গরিব মানুষ কেঁচো সার তৈরি করে স্বাবলম্বী হয়েছে।’
কুলসুমদের বাড়িতে যাওয়ার পথে নানা ধরনের সবজিখেত চোখে পড়ে। প্রায় প্রতিটি বাড়িতে দেখা গেছে হাঁস-মুরগি, কবুতর, ছাগল ও গাভি। বসতবাড়ির পতিত অংশে রয়েছে শাকসবজির বাগান। তৈরি করতে দেখা গেছে কেঁচো সার। কৃষকেরাসহ শিক্ষার্থীরাও ব্যস্ত এই সার তৈরির কাজে। গ্রামটি এভাবে বদলে যাওয়ার পেছনে সবাই বললেন কুলসুমের নাম।
কুলসুম বলেন, ‘ছোট দুই বোন সখিনা আখতার ও রোকেয়া আখতারও পড়াশোনা করছে। পড়াশোনা শেষে চাকরি নয়, নিজ উদ্যোগে সফল হওয়ার স্বপ্ন দেখি আমি।’