মায়ার মন্ত্রিত্ব-সাংসদ পদ নিয়ে বিভক্ত আদেশ

মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। ফাইল ছবি
মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। ফাইল ছবি

ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার মন্ত্রিত্ব ও সাংসদ পদ চ্যালেঞ্জ করে করা রিট আবেদনের বিষয়ে বিভক্ত আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ। এক বিচারপতি রুল দিলেও অন্যজন আবেদনটি খারিজ করে দিয়েছেন।
বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এ আদেশ দেন।
রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. ইউনূছ আলী আকন্দ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন।

মো. ইউনূছ আলী আকন্দ প্রথম আলোকে বলেন, জ্যেষ্ঠ বিচারপতি রিট আবেদনটি শুনানি শেষে রুল দিয়েছেন। কোন কর্তৃত্ব বলে মায়া এখনো মন্ত্রী ও সাংসদ পদে আছেন—রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, স্পিকার ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আর কনিষ্ঠ বিচারপতি রিট আবেদনটি খারিজ করে দিয়েছেন।
নিয়ম অনুসারে, আবেদনটি এখন প্রধান বিচারপতির কাছে যাবে। প্রধান বিচারপতি বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য হাইকোর্টের তৃতীয় বেঞ্চে পাঠাবেন।

মায়া কোন কর্তৃত্ববলে এখনো মন্ত্রী ও সাংসদ পদে আছেন—তা জানতে রুলের আরজি জানিয়ে গত ৭ জুলাই রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. ইউনূছ আলী আকন্দ। মায়া ছাড়া জাতীয় সংসদের স্পিকার ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে ওই আবেদনে বিবাদী করা হয়।

ইউনূছ আলী প্রথম আলোকে বলেন, গত ৩০ জুন মায়ার মন্ত্রী ও সাংসদ পদে থাকার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে তিনি আইনি নোটিশ পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু ওই নোটিশের জবাব না পাওয়ায় তিনি রিট আবেদন করেন।
জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপন করার দায়ে ২০০৮ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি মায়াকে ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫। ২০০৯ সালে ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মায়া। ২০১০ সালের ২৭ অক্টোবর হাইকোর্ট তাঁকে খালাস দেন। পরে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ১৪ জুন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ হাইকোর্টের দেওয়া খালাসের রায় বাতিল করে নতুন করে পুনঃশুনানির নির্দেশ দেন।

আপিল বিভাগের এ রায়ের পর মায়ার মন্ত্রী ও সাংসদ পদে থাকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান মন্তব্য করেন, মায়ার মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য পদে থাকা সংবিধানের ৬৬ (২) (ঘ) অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। কারণ, তিনি নৈতিকতার স্খলনজনিত অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন এবং আপিলে এখনো তিনি নির্দোষ সাব্যস্ত হননি। অন্যদিকে মায়ার আইনজীবী আবদুল বাসেত মজুমদার বলেন, মামলাটি এখনো আপিলে রয়েছে ও বিচারাধীন। সংবিধানে যা বলা আছে তা চূড়ান্ত রায়ের পর প্রযোজ্য হবে।