অপমান সহ্য করে চুপ ছিলাম

প্রধানমন্ত্রী শেখহাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখহাসিনা

বিরোধীদলীয় নেতার সঙ্গে ফোনালাপের সময় ‘দেশের মানুষের’ কথা ভেবে ‘অনেক অপমান’ সহ্য করেছেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গতকাল বুধবার ঢাকা ও এর আশপাশের জেলাগুলোর আওয়ামী লীগের নেতা ও সাংসদদের সঙ্গে গণভবনে এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যে সমস্ত কথা আমার শুনতে হলো, আমার ঠিক ওই ঝগড়া বা ওই ধরনের ইচ্ছা ছিল না। অনেক অপমান সহ্য করেও আমাকে চুপ করে থাকতে হয়েছে। দেশের মানুষের কথা ভেবেই এ সমস্ত অবান্তর কথা সহ্য করেছি।’ তিনি ফোনালাপ বাইরে প্রচারিত হওয়ার বিষয়ে বলেন, ‘এটা দেওয়ার ব্যাপারে আমি বলব, বিএনপির তরফ থেকেই প্রথম এটার অনেক কিছু পেপারে ছাপিয়ে দেয়। কাজেই পেপারে দিয়ে দেওয়ার পর পুরোটাই মানুষের শোনা ভালো। আমি কী শুনলাম, উনি কী বললেন?’
ফোনালাপ সম্পর্কে শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘উনার অনেক কথা। সব কথারই উত্তর আছে। আমি চেয়েছিলাম একটা সমঝোতার পথ, আলোচনার পথ। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করি। কিন্তু তিনি (খালেদা) একবার এ কন্ডিশন, ওই কন্ডিশন। একেকবার একেক কথা বলেছেন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিরোধীদলীয় নেতাকে হরতাল প্রত্যাহারের অনুরোধ করেছিলাম। তিনি মানলেন না। শুনলেন না। কতগুলো মানুষকে পঙ্গু ও অন্ধ করা হলো। ২০ জনের ওপর মানুষের জীবন গেল। হরতালের কারণে অনেক মায়ের কোল খালি হয়েছে। কতগুলো পরিবারকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। তিনি বিরোধীদলীয় নেতাকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘এভাবে শুধু মানুষ খুন করবেন, এটাই কি তাঁর একমাত্র খেলা? দেশের মানুষকে নিয়ে তিনি এভাবে খেলে যাবেন? তিনি কী অর্জন করলেন? এই প্রশ্নটা রেখে গেলাম।’

বৈঠকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, বিএনপি স্বাভাবিক রাজনৈতিক দল নয়। জটিল রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা করা দুরূহ। মিলিটারি কায়দার রাজনৈতিক দলের মনোভাব বোঝা কঠিন।

সংলাপের বিষয়ে সৈয়দ আশরাফ বলেন, আলোচনার সময় শেষ হয়ে যায়নি। সব সমস্যার সমাধানের সময়ও শেষ হয়নি। তিনি বলেন, ‘উনারা (বিরোধী দল) আবার আমন্ত্রণ চাচ্ছেন। এমন একটা ভাবসাব, যেন আরেকবার দাওয়াত দেওয়া হোক। দাওয়াত তো আছেই। আসতে পারেন। প্রয়োজন হলে দাওয়াত দেওয়া হবে। এক শবার দাওয়াত দিতেও প্রস্তুত আছি।’

বৈঠকে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু বলেন, বিরোধী দল হরতাল প্রত্যাহার করে আগেই আলোচনায় আসতে পারত।
এখন ২০ লাশের কৈফিয়ত কে দেবে? তাদের এই কৈফিয়ত দিতে হবে।

উপদেষ্টা পরিষদের আরেক সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেন, বিরোধী দলের অবরোধ কর্মসূচির খবর পত্রিকায় এসেছে। এখন রুখে দাঁড়াতে হবে। সবাইকে রাজপথে থাকতে হবে।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মতিয়া চৌধুরী, সাহারা খাতুন, রাজিউদ্দিন আহমেদ, মাহবুব উল আলম হানিফ, দীপু মনি প্রমুখ।