মহেশপুরে সেই ক্লিনিক সিলগালা

ঝিনাইদহের মহেশপুরে অস্ত্রোপচার করে সন্তান জন্মদানের পর চার প্রসূতির মৃত্যু ও আরও পাঁচজন মৃত্যুঝুঁকিতে পড়ার ঘটনায় অভিযুক্ত ক্লিনিকটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে। আর ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটি আগামীকাল বৃহস্পতিবার কাজ শুরু করবে।
৪০ দিনে চার প্রসূতির মৃত্যু ও গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার প্রথম আলোতে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা নড়েচড়ে বসেছেন। এরই মধ্যে ক্লিনিকটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।
সিলগালা করার বিষয় নিশ্চিত করে ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন আবদুস সালাম জানান, ঘটনা তদন্তে যে কমিটি করা হয়েছে সেটার নেতৃত্ব তিনিই দেবেন। অন্য সদস্যরা হলেন সিনিয়র কনসালট্যান্ট (গাইনি) এমদাদুল হক ও জুনিয়র কনসালট্যান্ট (সার্জারি) জাহিদুর রহমান। তাঁরা বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) তদন্ত করতে মহেশপুর যাবেন। তদন্ত শেষে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিভিল সার্জন আরও জানান, তদন্তে সহায়তা করতে ওই দিন সকাল ১০টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভুক্তভোগী রোগীদের স্বজনকে হাজির হতে বলা হয়েছে। তবে রোগীদের স্বজনেরা বলেন, তাঁরা গতকাল বিকেল পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো চিঠি পাননি। তা ছাড়া, ঘটনাস্থল থেকে ১১ কিলোমিটার দূরে মহেশপুর শহরে গিয়ে ঠিকভাবে কথা বলতে পারবেন কি না, তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন।
এদিকে ক্লিনিকটিতে অস্ত্রোপচারের পর গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়া আরেকজন প্রসূতিকে বাড়ি ফেরত নেওয়া হয়েছে। পাঁচপোতা গ্রামের নার্গিস খাতুন নামের এই প্রসূতিকে গত সোমবার ফেরত আনার পর বর্তমানে তিনি মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। তাঁকে নিয়ে তিনজন প্রসূতি মৃত্যুঝুঁকি নিয়েই বাড়ি ফিরলেন। ঢাকা ও যশোরে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও দুজন। তাঁদের অবস্থাও ভালো না বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।
ঘটনা ধামাচাপার চেষ্টা চলছেই: চার প্রসূতির মৃত্যু ও অন্যদের মৃত্যুঝুঁকিতে পড়ার ঘটনাগুলো ঘটেছে ঈদের পর থেকে ৪০ দিনের মধ্যে। এই সময়ে ক্লিনিকের মালিকপক্ষ প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মাধ্যমে অর্থের বিনিময়ে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালায়। সোমবারও এ তৎপরতা চালানো হয় বলে জানা গেছে।
অস্ত্রোপচারের পর মারা যাওয়া প্রসূতিদের একজন রুপা খাতুন। তাঁর পরিবার এত দিন টাকা নিতে রাজি না হলেও সোমবার রাতে ৫০ হাজার টাকা নিয়েছে। ভৈরবা এলাকার কিছু ব্যক্তির অনুরোধে এ টাকা গ্রহণ করেছেন রুপার চাচা মশিয়ার রহমান। তিনি জানান, টাকা নিতে বাধ্য হয়েছেন।