ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৬

ফরিদপুরে দুটি বাসের সংঘর্ষে নারী ও শিশুসহ ছয়জন নিহত হয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছে আরও ৬৫ জন। আজ বুধবার বেলা তিনটার দিকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে ফরিদপুর সদর উপজেলার গেরদা ইউনিয়নের জামতলা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। 

দুর্ঘটনার কারণ তদন্তে ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) এরাদুল হককে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

টেকেরহাট থেকে ফরিদপুরগামী রাব্বী পরিবহন নামের একটি মিনিবাসের সঙ্গে একই রুটের বিপরীতমুখী মৃধা ডিলাক্স নামের অপর একটি মিনিবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। এতে মৃধা ডিলাক্স বাসটি রাস্তার ডানপাশের খাদে পড়ে যায়।
দুর্ঘটনায় মৃধা ডিলাক্সের সুপারভাইজার ফরিদপুর সদরের কাফুরা এলাকার করুণ দত্ত (৪৫), গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের মহারাজপুর এলাকার হাবিব শেখ (৫০) এবং সালথা এলাকার সাথী বেগম (৩৭) ঘটনাস্থলেই নিহত হন। হাসপাতালে নেওয়ার পর ভাঙ্গা উপজেলার পুজারপুর গ্রামের বিলকিস বেগম (৪৫), আনুমানিক ৪৫ বছর বয়সী এক নারী ও দুই বছর বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের রেজিস্ট্রার সায়িদ গোলাম রাব্বী প্রথম আলোকে জানান, দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে আসা দুই বছর বয়সী এক শিশু মারা গেছে। তবে স্বজনেরা সঙ্গে সঙ্গে মৃতদেহটি নিয়ে যাওয়ায় তার পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী জামতলা এলাকার লিয়াকত হোসেন জানান, একটি নছিমনকে সাইড দিতে গিয়ে দুটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এর ফলে একটি বাস রাস্তার ডানপাশে খাদে পড়ে যায়।

ঘটনার অপর প্রত্যক্ষদর্শী ওই একই এলাকার শেফালী ঘোষ বলেন, এ দুর্ঘটনার কারণে প্রায় দেড় ঘণ্টা দুই পাশের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় দুই পাশে অসংখ্য যানবাহন আটকা পড়ে। পরে পুলিশের একটি রেকার ঘটনাস্থলে এসে দুর্ঘটনাকবলিত বাস দুটিকে সরিয়ে নেয়।

দুর্ঘটনাকবলিত বাসের যাত্রী রোকেয়া বেগম জানান, ‘আমি আমার তিন মাসের শিশুকে নিয়ে ভাঙ্গার পুলিয়াতে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ সামনের দিকে থেকে প্রচণ্ড গতিতে আসা আরেকটি বাস আমাদের বাসকে আঘাত করলে সেটি খাদে পড়ে যায়। এ ঘটনায় আমি আহত হলেও আমার শিশু অক্ষত রয়েছে। দুর্ঘটনার পর জানালা দিয়ে শিশুটিকে অক্ষত অবস্থায় এক ব্যক্তি উদ্ধার করে।’

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক গণপতি বিশ্বাস বলেন, এ দুর্ঘটনায় আহত ৬৫ জনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে আনা হয়। এখানে আহত একজনের মৃত্যু হয়। বর্তমানে ৫৫ জন চিকিৎসাধীন। এর মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

ফরিদপুর ভাঙ্গা হাইওয়ে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আলমগীর হোসেন বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে হতাহতদের উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।

জেলা প্রশাসক সরাফত আলী প্রথম আলোকে বলেন, নিহত লোকজনের দাফন কাফনে এবং আহত লোকজনের চিকিৎসায় যাবতীয় সহায়তা দেবে প্রশাসন। এ ছাড়া কোনো রোগীকে ঢাকা নেওয়ার প্রয়োজন হলে তার ব্যবস্থাও করবে ফরিদপুরের প্রশাসন।