এমপি হোস্টেল থেকে যুবলীগ নেতার কার্যালয় অপসারণ

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের সংসদ সদস্য ভবনের (এমপি হোস্টেল) একটি কক্ষ দখল করে ব্যবসায়িক কার্যালয় খুলেছিলেন যুবলীগের নেতা আবু সাদেক। পুলিশ গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে কক্ষটিতে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু অবৈধ মালামাল জব্দ করেছে। এ সময় যুবলীগের ওই নেতা ছিলেন না।
পুলিশ ও সংসদ সদস্য ভবনটির একাধিক সূত্র জানায়, শেরেবাংলা নগর এমপি হোস্টেলের ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ভবনের বাসিন্দাদের নিরাপত্তার জন্য ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা (সিসি) বসানো হয়। তিনটি ভবনের সিসি ক্যামেরার নিয়ন্ত্রক কক্ষ হিসেবে ৫ নম্বর ভবনের নিচতলার একটি কক্ষ হোমল্যান্ড এজেন্সি নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বরাদ্দ দেয় সংসদ সচিবালয়। কিন্তু দেড় বছর আগে কক্ষটি দখলে নিয়ে ঠিকাদারি কার্যালয় খোলেন ২৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি মো. আবু সাদেক। তিনি কক্ষটির এক কোনায় একটি টেবিল সিসি ক্যামেরার মনিটরের জন্য ছেড়ে দেন। নিজের জন্য কাচের পার্টিশন দিয়ে আলাদা কক্ষ বানান। প্রতিদিন সেখানে তিনি ব্যবসায়িক কাজের পাশাপাশি আড্ডা বসাতেন।
গতকাল বিকেলে কর্তব্যরত হোমল্যান্ড এজেন্সির আইটি কর্মকর্তা মো. আনিসুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, ‘কক্ষটি দখল হওয়ার পর আমরা যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’ তবে সংসদ সচিবালয়ের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, হোমল্যান্ড এজেন্সির সঙ্গে সমঝোতা করেই এত দিন কক্ষটি দখলে নিয়েছেন যুবলীগের ওই নেতা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ৫ নম্বর ভবনের বাসিন্দাদের কয়েকজন সাংসদ বিষয়টি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানান। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে গতকাল সেখানে তল্লাশি চালানো হয়। পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার ঘটনাস্থলে যান।
গতকাল বিকেলে ৫ নম্বর ভবনে গিয়ে দেখা যায়, শেরেবাংলা নগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নৃপেন চন্দ্র বিশ্বাসের নেতৃত্বে একদল পুলিশ জব্দ করা মালামাল গুটাচ্ছেন, পার্টিশন খুলছেন। এ সময় পুলিশ কক্ষের ভেতর থেকে চেয়ার, টেবিল, ঠিকাদারি ব্যবসার বেশ কিছু ফাইলপত্রসহ বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-সাংসদ ও নেতার সঙ্গে তোলা যুবলীগের নেতা আবু সাদেকের ছবি-সংবলিত বাঁধাই করা একটি বোর্ড জব্দ করে। সেগুলো থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, তল্লাশির সময় সাতটি ফেনসিডিলের বোতলও উদ্ধার করা হয়। এ সময় রুবেল নামে একজনকে আটক করে পুলিশ।
জানতে চাইলে এসআই নৃপেন চন্দ্র বিশ্বাস যুবলীগের নেতা আবু সাদেকের কক্ষ দখলের কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, পুলিশের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশে তল্লাশি চালানো হয়। কক্ষ থেকে ১৮ ধরনের মালামাল জব্দ করা হয়েছে। তবে তিনি দাবি করেন, উদ্ধার করা ফেনসিডিলের বোতলগুলো খালি ছিল।
এ ঘটনায় গতকাল রাত পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। তবে ঢাকা মহানগর পুলিশের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনো মামলা হয়নি। সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগ মামলা করতে চাইলে তাঁরা মামলা নেবেন।