রেলওয়ে ও পৌরসভার রশি টানাটানি

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া রেলস্টেশনে যাওয়ার একমাত্র সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সম্প্রতি তোলা ছবি l প্রথম আলো
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া রেলস্টেশনে যাওয়ার একমাত্র সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সম্প্রতি তোলা ছবি l প্রথম আলো

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া পৌরসভার আওতাধীন রেলস্টেশন সড়কটির কার্পেটিং উঠে অসংখ্য খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। প্রায় চার বছর ধরে এই অবস্থার সৃষ্টি হলেও সড়কটি মেরামতে কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থাই নিচ্ছে না; বরং এ নিয়ে পৌরসভা ও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের মধ্যে রশি টানাটানি চলছে।
পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, সড়কটি পৌরসভার অন্তর্ভুক্ত হলেও রেলওয়ের জায়গায় নির্মিত। রেল বিভাগ এটি সংস্কার করতে বাধা দিচ্ছে। তবে রেল কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘পৌরসভাকে সংস্কারকাজে বাধা দেওয়া হয়নি। তারা কাজ না করায় আমরা এটি সংস্কারের অনুমতি চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়েছি।’
স্থানীয় বাসিন্দা ও যাত্রীদের অভিযোগ, উল্লাপাড়া রেলস্টেশন থেকে নগরবাড়ী-বগুড়া মহাসড়কের সংযোগ সড়কটির দূরত্ব প্রায় ৮০০ মিটার। এই সড়কটি চার বছর ধরে খানাখন্দে ভরা। ঢাকাসহ উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গে ট্রেনে যাতায়াতকারীরা প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে চলাচল করে থাকে। সড়কজুড়ে খানাখন্দ থাকায় একদিন বৃষ্টি হলে এক সপ্তাহ পর্যন্ত পানি জমে থাকে। পৌর শহরের ভেতরে হলেও তারা এটি মেরামত করছে না। অপরদিকে রেল কর্তৃপক্ষও কাজ করছে না। এ নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আবু সাঈদ, ইকবাল হোসেন ও রোস্তম আলী বলেন, ট্রেনের যাত্রী ছাড়াও এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ছয়-সাতটি গ্রামের কয়েক হাজার লোক সরকারি খাদ্যগুদামের ধান, বিভিন্ন আমদানি-রপ্তানির কয়েক শ টন মালামাল পরিবহন করে থাকে। অসংখ্য গর্ত ও খানাখন্দ হওয়ায় এই সড়কে বর্তমানে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এখন রাস্তাটিতে হেঁটে চলাও কঠিন হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে উল্লাপাড়া রেলস্টেশনের মাস্টার শামসুল ইসলাম বলেন, সড়কটি সংস্কারের জন্য রেল কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উল্লাপাড়া পৌরসভা মেয়র বেল্লাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, কয়েক বছর আগে সড়কটি মেরামতের কাজ করতে গেলে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বাধা দেওয়ায় তা করা সম্ভব হয়নি। সংস্কারের অনুমতি চেয়ে আবার রেল কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দেওয়া হবে। অনুমতি পেলে কাজ করা হবে। তবে জরুরি ভিত্তিতে দু-এক দিনের মধ্যে ইট, খোয়া ও বালু ফেলে সড়কটি চলাচলের উপযোগী করা হবে।
রেলওয়ে বিভাগের সিরাজগঞ্জের দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান বলেন, পৌরসভাকে সংস্কারকাজে বাধা দেওয়া হয়নি। তারা কাজ করতেই আসেনি। তারপরেও সড়কটি সংস্কারের জন্য ৬৫ লাখ টাকার একটি প্রাক্কলন তৈরি করে রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। অনুমতি পাওয়া গেলে কাজ শুরু করা হবে।