শরিকদের নিয়ে খোঁচাখুঁচি না করার পরামর্শ প্রধানমন্ত্রীর

মহাজোটের শরিকদের নিয়ে খোঁচাখুঁচি না করার জন্য আওয়ামী লীগের নেতাদের পরামর্শ দিয়েছেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল শুক্রবার গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের এক বৈঠকে শেখ হাসিনা এ পরামর্শ দেন। বৈঠকে উপস্থিত অন্তত তিনজন নেতার সঙ্গে কথা বলে এ পরামর্শের বিষয়টি জানা গেছে।
বৈঠক সূত্র জানায়, শেখ হাসিনা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির ঐক্য ঠিক রাখতে হবে। আওয়ামী লীগের নেতাদের শরিকদের নিয়ে খোঁচাখুঁচি করা উচিত হবে না। কারণ, শরিকেরা সবাই একটি সংগ্রামের মধ্যে আছে।
সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা ও এর আগে-পরে জাসদের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনামূলক বক্তব্য দেন। পরে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফও জাসদবিরোধী বক্তব্য দেন।
বৈঠক সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা আগামী ডিসেম্বরে দলের জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠানের কথা বলেন এবং সে অনুসারে প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেন। কার্যনির্বাহী সংসদের পরবর্তী বৈঠকে সম্মেলন প্রস্তুতির জন্য বিভিন্ন উপকমিটি গঠনেরও সিদ্ধান্ত হয়। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদ আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত।
বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা জানান, প্রধানমন্ত্রী দলের নেতাদের উদ্দেশে বলেছেন, তাঁরা যেন বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের হরতাল-অবরোধের সময় সারা দেশে যে অরাজকতা হয়েছে তা সভা-সমাবেশে তুলে ধরেন। ওই সময়ের ক্ষয়ক্ষতির কথা জনগণকে জানানোর নির্দেশ দেন তিনি।
বৈঠক সূত্র জানায়, কোন্দলের কারণে দীর্ঘদিন ধরে কুমিল্লা আওয়ামী লীগের দুটি জেলা কমিটি ও মহানগর কমিটি হচ্ছে না। এসব কমিটি গঠনে শেখ ফজলুল করিম সেলিমের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি কমিটিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
বৈঠকে ১০টি জেলা কমিটি অনুমোদনের জন্য তোলা হয়। আলোচনা শেষে জয়পুরহাট, পঞ্চগড়, বাগেরহাট, ঝিনাইদহ ও মেহেরপুর জেলা কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে বাকি পাঁচটি জেলা কমিটি নিয়ে আপত্তি তোলা হয় বৈঠকে। যেসব কেন্দ্রীয় নেতা জেলা সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন, তাঁদের আপত্তি নিষ্পত্তি করার দায়িত্ব দেওয়া হয়।
গতকালের সভায় সূচনা বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আর কোনো বিতর্ক না তোলার আহ্বান জানান।
সন্ধ্যা সাতটায় শুরু হওয়া বৈঠকে মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মোহাম্মদ নাসিম, কাজী জাফরউল্লাহ, নূহ-উল-আলম লেনিন, মাহবুব উল আলম হানিফ, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন, হাছান মাহমুদ, সুজিত রায় নন্দীসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের অধিকাংশ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।