'সরকার ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থায়'

এমাজউদ্দীন আহমদ। ফাইল ছবি
এমাজউদ্দীন আহমদ। ফাইল ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এমাজউদ্দীন আহমদ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভ্যাট আরোপের বিরোধিতা করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, পৃথিবীর কোথাও শিক্ষায় ভ্যাট নেই। সরকার এসব পদক্ষেপ তখনই নেয় যখন তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারাচ্ছন্ন। সরকার ‘ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি’-এ রকম অবস্থায় চলে এসেছে।
আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় এমাজউদ্দীন এসব কথা বলেন। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অষ্টম কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে ওই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপিপন্থীদের সংগঠন আদর্শ ঢাকা আন্দোলনের আহ্বায়ক এমাজউদ্দীন বলেন, সব জেলায় বিএনপির গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নেতা নির্ধারণ করা দরকার। এটাই একমাত্র পথ হওয়া উচিত।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে নির্বাচনের বাইরে রাখা হতে পারে এমন আশঙ্কার কথা জানিয়ে এমাজউদ্দীন বলেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যেভাবে বিচার চলছে, এটা অর্থপূর্ণ। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অহিংস আন্দোলনের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘পথটা আমাদের চেনা থাকল। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলে মেয়েদের মতো, আঘাত দেওয়ার, আগুন দেওয়ার দরকার নাই। শুধু ঢাকার মধ্যে সীমিত রাখারও দরকার নাই।’

বিএনপির নেতাদের উদ্দেশে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘পার্টিতে গণতন্ত্র কেমন তা নিয়ে আলোচনার প্রয়োজন আছে। পার্টি তাতে শক্তিশালী হবে। না হলে আলোচনায় লোক আরও কমবে ভবিষ্যতে। এত বড় বিপদ সামনে অথচ স্থায়ী কমিটির কটি বৈঠক হয়েছে?’
জাফরুল্লাহ চৌধুরী আরও বলেন, ‘প্রশ্ন করেন সংগঠনের কী হবে? যদি খালেদা জিয়াকে জেল দেয় চেয়ারপারসনের দায়িত্ব কে নেবে? এগুলো আলাপ করেছেন, না খোদার ওপর ছেড়ে দিয়েছেন।’
জাফরুল্লাহ চৌধুরী দাবি করেন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমদকে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এর সহযোগিতায় শিলং নেওয়া হয়েছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের আত্মগোপনে থাকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, টাকার লেনদেন হয়েছে বলে পুলিশ তাঁকে ধরছে না। এটি আব্বাস এবং খালেদা জিয়া, বিএনপি—সবার জন্যই ক্ষতিকর।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বিএনপির গঠনতন্ত্রে যা আছে, সঠিকভাবে পালন করলে তা গণতন্ত্রের জন্য যথেষ্ট। কিন্তু যা আছে তা-ও পালন করা হয় না। দলের ভেতরে পুরোপুরি গণতন্ত্র চর্চা হয় না। এখন আর কর্মীরা নেতা নির্বাচন করে না। এ জন্য তিনি দলের নেতাদের দায়ী করেন। তাঁর অভিযোগ, দলের কিছু নেতা নিজেদের স্বার্থে খালেদা জিয়াকে দিয়ে ‘অপকর্ম’ করান। পরে সাংবাদিকদের বলেন, দলে একজনের নির্দেশেই সব হয়।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন। অন্যদের মধ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য মোস্তাহিদুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তাজমেরী এস এ ইসলাম, যুবদলের সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন।