সম্মানজনক সমাধান সম্ভব, আলোচনার দরজা বন্ধ নয়

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা কেটে যাবে বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেছেন, সরকার বিষয়টি নিয়ে অনমনীয় নয় এবং এ বিষয়ে আলোচনার দরজাও বন্ধ নয়। বিষয়টি পুনর্বিবেচনারও ইঙ্গিত দেন তিনি।
সচিবালয়ে গতকাল রোববার বিকেলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকেন্দ্র নির্মাণসংক্রান্ত এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এ সময় উপস্থিত ছিলেন এবং তিনিও কথা বলেন এ বিষয়ে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘মূসক নিয়ে যে জটিলতা তৈরি হয়েছে, আমি আশা করি এর একটি সম্মানজনক সমাধান সম্ভব।’ সমাধানটি শিগগিরই হয়ে যাবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
বাণিজ্যমন্ত্রীও বলেন, ‘এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং এর সমাধানও হয়ে যাবে।’ তিনি বলেন, বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কথা ভাবতে হবে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে মূসক নিয়ে যে জটিলতা দেখা দিয়েছে, সে বিষয়ে সরকার অনমনীয় (রিজিড) অবস্থান নেয়নি বলেও জানান মুহিত। তিনি বলেন, ‘গত ছয় বছরে আমরা অনেক বিষয়ই পুনর্বিবেচনা করেছি।’ অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আশা করি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মূসক নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসবে।’
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর আরোপ করা ৭ দশমিক ৫ শতাংশ মূসক প্রত্যাহারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার তাঁদের অবরোধে অচল হয়ে পড়ে রাজধানী। এরপর সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মূসক দেবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, শিক্ষার্থীরা নন। গত শুক্রবার সোনারগাঁও হোটেলে এক অনুষ্ঠানের আগে অর্থমন্ত্রী আবার এ বিষয়ে কথা বলেন। ওই দিন তিনি বলেন, মূসক নিয়ে আন্দোলনের কোনো যৌক্তিকতা খুঁজে পান না তিনি।
এরপর গতকাল রোববারও মূসক প্রত্যাহার নিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় মিছিল-সমাবেশ করেছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
অন্যদিকে মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত নতুন বেতনকাঠামোতে মর্যাদাহানি হয়েছে বলে আন্দোলন করছেন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এটা নিয়ে বসতে হবে। তাঁদের পদের পাঁচ-ছয়টা ধাপ রয়েছে। পিরামিডটা কোথাও হয়তো কমবেশি হয়ে গেছে।’
অর্থমন্ত্রী অবশ্য এখনো মনে করেন শিক্ষকেরা যে আন্দোলন করছেন, তা ঠিক নয়। গতকাল আবারও তিনি বলেন, ‘বেতন কমিশন যে প্রতিবেদন দিয়েছে, তাতে কোথাও তাঁদের মর্যাদা হানি করা হয়নি।’
জ্ঞানের অভাবে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা আন্দোলন করছেন—গত সপ্তাহে এমন মন্তব্য করেন অর্থমন্ত্রী। এ অবমাননাকর বক্তব্যের কারণে তাঁর সঙ্গে আলোচনায় বসবেন না বলে গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়ে দিয়েছেন শিক্ষকেরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুহিত বলেন, ‘না না, ঠিক আছে। না বসলে না বসবেন। তবে এ-বিষয়ক অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন কমিটি সব সময়ই কাজ করে আসছে।’ তোফায়েল আহমেদও একই বিষয়ে বলেন, ‘তাঁরা বসতে না চাইলে কী করার আছে?’