নির্বাচনের আগে কমিটি চান না আ.লীগ নেতারা

নির্বাচনের আগে নগর আওয়ামী লীগের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হলে দলীয় কোন্দল আবার চাঙা হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় নেতারা। কমিটি হলে পদবঞ্চিত নেতারা নির্বাচনে নিষ্ক্রিয় হয়ে যেতে পারেন। এমনকি প্রকাশ্যে প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারেন। তাই এখনই কমিটি চাচ্ছেন না নগর আওয়ামী লীগের নেতারা।
নগর ছাত্রলীগের নতুন কমিটি ঘোষণার পর যে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে, কেন্দ্রকে এ থেকে শিক্ষা নেওয়ার তাগিদ দিচ্ছেন স্থানীয় নেতারা। গত বুধবার নগর ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণার পর পদবঞ্চিত নেতারা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছেন। এ সময় যানবাহন ভাঙচুর করা হয়।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী ইনামুল হকের মৃত্যুর পর কেন্দ্র থেকে নতুন কমিটি ঘোষণার ব্যাপারে তোড়জোড় শুরু হয়। নগর আওয়ামী লীগের কমিটি শিগগিরই ঘোষণা হচ্ছে, এমন সংবাদও সম্প্রতি গণমাধ্যমে এসেছে। কমিটিতে সাধারণ সম্পাদকসহ বেশ কিছু পদে নতুন মুখ আসছেন বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু নির্বাচনের আগে কমিটি গঠন সাংগঠনিক দিক থেকে ঝুঁকিপূর্ণ হবে মনে করছেন বেশির ভাগ নেতা।
জানতে চাইলে নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘নির্বাচনের আগে কমিটি ঘোষণা করবে কি করবে না সেটা কেন্দ্রের বিষয়। এ বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। তবে কমিটি না হলেও আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে দলকে যেভাবে এগিয়ে নিচ্ছি, সেভাবে কাজ করব। আমরা তিন যুগ্ম সম্পাদক ভারপ্রাপ্ত হিসেবে সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছি।’
জানা গেছে, নগর আওয়ামী লীগ বর্তমানে একটি ঐক্য-প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। কিছুদিন আগেও দলের সভাপতি সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী, সহসভাপতি নুরুল ইসলাম বিএসসি ও যুগ্ম সম্পাদক প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী আফছারুল আমীনের মধ্যে ত্রিমুখী দ্বন্দ্ব ছিল। দ্বন্দ্ব নিরসনের জন্য বছর দুয়েক আগে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা বর্তমান প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন ও প্রয়াত নেতা আখতারুজ্জামান চৌধুরীকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন।
কিন্তু সরকারের মেয়াদ যতই ঘনিয়ে আসছিল, ততই সেই বিভেদ ভুলে তাঁরা কাছাকাছি আসেন। মহিউদ্দিন চৌধুরী ইতিমধ্যে নিজে নির্বাচন না করার ঘোষণা দিয়ে দলের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছেন। এতে ঐক্য-প্রক্রিয়া বেগবান হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করছেন। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিরোধী দলের চলমান আন্দোলন প্রতিরোধ এবং নির্বাচন নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ভেতরে ভেতরে প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিরোধী দলের সঙ্গে সমান্তরালভাবে পাল্টা কর্মসূচিও দিয়ে সভা-সমিতিও করেছে। নতুন কমিটি এসবে ছন্দপতন ঘটাতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। যুগ্ম সম্পাদক খোরশেদ আলম বলেন, ‘কমিটি কখন হবে না হবে সেটা ভাবার সময় নেই। এটা কেন্দ্র দেখবে। এখন নেতা-কর্মীরা নির্বাচনমুখী হচ্ছেন। পাশাপাশি বিরোধী দলের নৈরাজ্য প্রতিরোধে আমরা অগ্রগামী।’