আগামীকাল থেকে আবার ৬০ ঘণ্টার হরতাল

নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে এক সপ্তাহের মাথায় আবার ৬০ ঘণ্টার হরতাল ডেকেছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮-দলীয় জোট। আগামীকাল সোমবার সকাল ছয়টা থেকে বুধবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত সারা দেশে টানা এই হরতাল কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে বিরোধীদলীয় জোট।

গতকাল শনিবার বিএনপির গুলশান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি জানান, গণমাধ্যমের যানবাহন, অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার ব্রিগেডসহ জরুরি সেবার কাজে নিয়োজিত গাড়ি ও বিমানবন্দর থেকে হাজিদের বহনকারী গাড়ি হরতালের আওতামুক্ত থাকবে।

হরতালের প্রথম দিনই দেশে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) শুরু হচ্ছে। এই পরীক্ষা হরতালের আওতামুক্ত থাকবে কি না—এ প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে বলেছি, কী কী হরতালের আওতামুক্ত থাকবে। কোনো সংশোধনী থাকলে পরে আমরা তা জানাব।’

এর আগে গত ২৭ অক্টোবর সকাল থেকে ২৯ অক্টোবর সন্ধ্যা পর্যন্ত টানা ৬০ ঘণ্টার হরতাল পালন করে ১৮-দলীয় জোট। ওই হরতালকে কেন্দ্র করে তখন সারা দেশে অন্তত ২০ জনের মৃত্যু হয়।

এ কারণে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে সরকারকে হুঁশিয়ার করে মির্জা ফখরুল বলেন, হরতালে বাধা দিলে তার ফলাফলের দায় সরকারকে নিতে হবে।

সংলাপ না হওয়ার দায় সরকারের: সংলাপ না হওয়ার জন্য সরকারকে দায়ী করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব। তিনি দাবি করেন, মুখে সংলাপের কথা বললেও সরকার সমঝোতা চায় না। সে কারণে নানা রকম নেতিবাচক নাটক তৈরি করছে, যাতে সংলাপ না হয়।

প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেতার ফোনালাপ প্রকাশের জন্য সরকারকে দোষারোপ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, সম্পূর্ণ বেআইনি ও অনৈতিকভাবে বিরোধীদলীয় নেতার সম্মতি ছাড়াই গণমাধ্যমে তা প্রচার করা হয়েছে। এটি আইনবিরুদ্ধ ও মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। সরকার উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এটা প্রচারের ব্যবস্থা করেছে। যাতে সংলাপ হতে না পারে, সমঝোতার পথ বন্ধ হয়ে যায়। সরকার বিএনপিকে বাদ দিয়ে একতরফা নির্বাচন করতে চাইছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া গত ২১ অক্টোবর সংবাদ সম্মেলন করে একটি নির্দলীয়-নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা জাতির সামনে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘আমি নিজে এ বিষয়ে আলোচনা শুরুর উদ্যোগ গ্রহণের জন্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে চিঠি দিয়েছিলাম। সংসদে আমাদের সদস্যরা এ রূপরেখা উপস্থাপন করেন। সরকারি দলের সদস্যরা বিরোধী দলের প্রস্তাবের তিক্ত সমালোচনা করে তাঁরা নাকচ করে দেন। ফলে বাধ্য হয়েই আমাদের আন্দোলনের পথে যেতে হয়।’

সংবাদ সম্মেলনের আগে ১৮-দলীয় জোটের মহাসচিব পর্যায়ে বৈঠক হয়।