জরায়ুর বাইরে পেটে মৃত শিশু!

জরায়ুর বাইরে এক নারীর পেটে বেড়ে উঠছিল ভ্রুণ। দশ মাস পর শিশুটি পেটের মধ্যে মারা যায়। মৃত্যুর আরও আট মাস পর অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পেট থেকে মৃত শিশুটি বের করেছেন চিকিৎসকেরা। অস্ত্রোপচারের পর এখন সুস্থ আছেন ওই নারী।

 শনিবার নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিভাগের চিকিৎসক হেমা সানজিদ সফল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে মৃত শিশুটিকে মায়ের পেট থেকে বের করে আনেন। তিনি জানান, ১৮ মাস আগে ওই নারীর জরায়ুর বাইরে পেটের ভেতরে কন্যাসন্তানের ভ্রণ সৃষ্টি হয়।

ওই নারীর স্বামী মো. রফিক বলেন, স্বাভাবিক নিয়মে নির্দিষ্ট সময়ে তাঁর স্ত্রী সন্তান প্রসব না করায় তিনি প্রথমে সুবর্ণচরের খাসেরহাট বাজারে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে যান। কিন্তু সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেও এ বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু জানাতে পারেননি ডাক্তাররা। পরে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে দীর্ঘ আট মাস ধরে ঝাড়ফুঁক দিয়েও কোনো কাজ না হওয়ায় শেষে জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।

জরায়ুর বাইরে শিশুর জন্ম ও বেড়ে ওঠার ঘটনাকে অতি বিরল বলছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক রেজাইল করিম কাজল। তিনি বলেন, জরায়ুর বাইরে পেটে শিশু জন্ম নিলেও তার বাঁচার সম্ভাবনা খুব কম থাকে।

ওই নারী নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চর বৈশাখী গ্রামের মো. রফিকের স্ত্রী। অস্ত্রোপাচারের পর ওই নারী প্রসূতি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

চিকিৎসক হেমা সানজিদ প্রথম আলোকে বলেন, হাসপাতালে ভর্তির পর পরীক্ষা করে দেখা যায় ওই নারীর জরায়ু, ডিম্বনালি কিং ডিম্বাশয় কোথাও শিশুটি বেড়ে ওঠেনি। জরায়ুর বাইরে পেটের ভেতরে বেড়ে ওঠা শিশুটি গত জানুয়ারি মাসের কোনো এক সময়ে মারা গেছে।

এ ধরনের ঘটনা লাখে একটি ঘটতে পারে মন্তব্য করেন হেমা সানজিদ বলেন, ‘চিকিৎসা বিজ্ঞানে একে ইন্ট্রা অ্যাবডোমিনাল প্রেগনেন্সি বলা হয়। এসব ক্ষেত্রে প্রসূতির মৃত্যুর হার ৮০ শতাংশেরও বেশি থাকে। তবে আল্লাহর রহমতে সফল অস্ত্রোপচারের পর ওই নারী এখন অনেক সুস্থ আছেন।’