সন্দ্বীপে যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে কোরবানির পশুর হাটে জোড়া খুনের মামলার আসামি যুবলীগ নেতা ফজলে এলাহী ওরফে মিশু ও তাঁর তিন সহযোগীকে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবার ভোর পর্যন্ত উপজেলার বাউরিয়া এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।

পুলিশের দাবি, অস্ত্র উদ্ধারে গেলে মিশুর সহযোগীরা গুলি ছুড়লে পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। এতে মিশুর ডান পায়ে গুলি বিদ্ধ হয়। গ্রেপ্তার মিশু সন্দ্বীপ পৌরসভা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক।

আজ সকালে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, গত ২১ সেপ্টেম্বর সন্দ্বীপ পৌরসভার বাতেন মার্কেট পশুরহাটে চাঁদা না পেয়ে গুলি করলে দুজন ঘটনাস্থলেই নিহত হন। এ ঘটনায় করা মামলায় ফজলে এলাহী মিশুকেও আসামি করা হয়। পরে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে। গতকাল ভোররাতে মিশু সহযোগীদের নিয়ে উপজেলার বাউনিয়া এলাকায় অবস্থান করছে—এমন তথ্য পেয়ে পুলিশ তাঁদের ধরতে যায়। এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে মিশুর সহযোগীরা গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়ে। গুলিতে মিশুর ডান পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়। পরে মিশুর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাঁর বাড়ির আলমারি থেকে দুটি পিস্তল, তিনটি গুলি, দুটি দেশীয় তৈরি বন্দুক, দুটি শটগান, পাঁচটি গুলি এবং ১০টি কিরিচ উদ্ধার করা হয়। পরে উপজেলার সন্তোষপুর এলাকা থেকে মিশুর সহযোগী রুবেল, লুৎফুর রহমান ও রিয়াজকে আটক করা হয়। বাকিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।
পুলিশ সুপার হাফিজ আক্তার আরও বলেন, মিশু সন্দ্বীপ থানার তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। তিনি প্রতিদিনই এলাকায় আতঙ্ক ছড়াতে ফাঁকা গুলি ছুড়তেন। তাঁর ভয়ে এলাকার লোকজন ভীতসন্ত্রস্ত ছিল। কিন্তু কেউ থানায় অভিযোগ দেওয়ার সাহস পেত না। তাঁর বিরুদ্ধে থানায় চাঁদাবাজি, ডাকাতিসহ পাঁচটি মামলা রয়েছে।

গ্রেপ্তার মিশু যুবলীগের নেতা হওয়ায় তাঁকে গ্রেপ্তারে পুলিশ কোনো চাপে রয়েছে কি না সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার বলেন, সন্ত্রাসী সন্ত্রাসীই। এ ক্ষেত্রে কাউকে ছাড় দিতে নারাজ পুলিশ। মিশুকে গ্রেপ্তারের পরও পুলিশ কোনো চাপে নেই বলে জানান তিনি।

এদিকে অভিযুক্ত ফজলে এলাহী ওরফে মিশুর দাবি, জোড়া খুনের সঙ্গে জড়িত তিনি জড়িত নন। তিনি পৌরসভা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক।

গ্রেপ্তার মিশু ও তাঁর তিন সহযোগীকে সন্দ্বীপ আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হবে বলে জানান জেলা পুলিশ সুপার হাফিজ আক্তার। সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার (উত্তর) মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) মোহাম্মদ নাঈমুল হাছান উপস্থিত ছিলেন।